সাতসকালে মোটরবাইকে চড়ে এসে মন্দির থেকে গয়না-সহ দেবীমূর্তি চুরি করে নিয়ে গেল দুই দুষ্কৃতী। বুধবার বর্ধমান শহরের শ্যামলালে দয়াময়ী মন্দিরের ঘটনা। মন্দিরে উপস্থিত দুই মহিলাকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা লুঠপাট চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া একটি থলে পাওয়া গিয়েছে। অন্য কিছু সূত্রও মিলেছে। আশা করি, দুষ্কতীদের দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।” |
এ দিন সকলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় মানুষজন ভিড় জমিয়েছেন। মন্দিরে পড়ে রয়েছে মূর্তির ভাঙা অংশ। প্রতি দিন সকালে মন্দির পরিষ্কারের কাজ করেন খ্যাঁদারানি দাস নামে স্থানীয় এক মহিলা। তিনি বলেন, “সকালে মন্দির পরিষ্কার করার সময়ে হঠাৎ মাথায় আঘাত লাগে। ভেবেছিলাম, ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়েছে। ঘুরে দেখতে যেতেই আবার মাথায় আঘাত করে এক জন। পড়ে গিয়ে আমি চিৎকার শুরু করি। আমার সামনেই ওরা শাবল দিয়ে মূর্তি ভাঙল।” ঘটনার সময়ে মন্দিরে গিয়েছিলেন এলাকারই বাসিন্দা বাসন্তী দাস। তাঁর কথায়, “প্রতি দিনের মতো আজও সকালে ফুল নিয়ে মন্দিরে ঢুকতে গিয়ে দেখি, ভিতরে এক জন মহিলা চিৎকার করছেন। ও দিকে এক জন শাবল দিয়ে মূর্তি ভাঙছে। আমি একটু এগোতেই এক জন বেরিয়ে এসে মাথায় পিস্তল ঠেকাল। ভয়ের চোটে বেরিয়ে পালাই।” স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণচন্দ্র পাল বলেন, “সকালে উঠে মূর্তি-সহ দেবীর গয়না লুঠ হয়েছে জেনে ছুটে এসেছি। শুনলাম, দু’জন মহিলাকে পিস্তল দেখিয়ে দেড় ফুটের দেবীমূর্তি নিয়ে নম্বরহীন একটি মোটরবাইকে চড়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।”
মন্দিরের পুরোহিত শঙ্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রায় তিনশো বছরের পুরনো এই মন্দির তৈরি করেছিল বর্ধমানের রাজ পরিবার। মূর্তির গায়ে বেশ কয়েক ভরি করে সোনা ও রুপোর গয়না ছিল। তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীরা মূর্তির সঙ্গে গয়নাও নিয়ে পালিয়েছে। দেবীর শরীর থেকে গয়না খোলা হত না। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগই নিয়েছে।”
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া কালো ব্যাগ থেকে মুম্বইয়ের একটি ফোন নম্বর পেয়েছে পুলিশ। আপাতত সেই সূত্র ধরেই এগোনো হচ্ছে। স্থানীয় মানুষজনের দাবি, এলাকায় গত কয়েক দিন ধরেই ছিনতাই শুরু হয়েছিল। মন্দিরের সামনে দিনের বেলাতেই অনেকের দামি জিনিসপত্র বা টাকা কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মন্দিরে লুঠের ঘটনার পরে এলাকাবাসী আতঙ্কিত। |