নাকি চেয়েছিলেন সেনাবাহিনীর অফিসার হতে?

নাইজেল: হ্যাঁ, স্কুলে এন সি সি করতাম তো, তার পর আবার জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী আমাদের কলেজে এক বার এসেছিলেন। ওঁকে দেখে তখন আমার ধ্যান-জ্ঞান-স্বপ্নই ছিল আর্মি অফিসার হব। এখনও আমার খুব ইচ্ছে, সুযোগ পেলে দেশের জন্য কিছু করা।

আপনার জীবনে ‘রত্নাকর’ থেকে ‘বাল্মীকি’-তে উত্তরণের গল্পটা বলবেন?
নাইজেল: ২০০৭ সালের এক দিন জেলার সাহেব এসে বললেন, আমাদের নাচ শিখতে হবে। আমার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু শিখতেই হবে। নাচ শেখাতে এলেন অলকানন্দা রায়। আমি দলে জয়েন করলাম। ওই বছরেই ডিসেম্বরে স্টেজ রিহার্সালের জন্য আমাদের নিয়ে যাওয়া হল রবীন্দ্রসদনে। স্টেজে মার্ক করে বুঝিয়ে দেওয়া হল, কে কোথায় দাঁড়াবে। আমি স্টেজের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। সামনে সারি সারি ফাঁকা সিট। ভাবলাম, আমি কি এর যোগ্য! জীবনে এই প্রথম আমি হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করলাম। পুলিশ এত মেরেছে কোনও দিন কাঁদিনি। কিন্তু সে দিন খালি কেঁদেই যাচ্ছি। জীবনটাই পাল্টে গেল। ২০০৯ সালে সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে এলাম।

আপনি যাঁকে ‘মা’ বলেন, মানে নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়ের অবদান কতটা?
নাইজেল: ৭৫ শতাংশ।

বাকিটা কি আপনার?
নাইজেল: না, না, এখানে আমার কোনও অবদানই নেই। বাকিটা তৎকালীন ডিআইজি (কারা) বি ডি শর্মার। কারণ, উনিই তো উদ্যোগটা নিয়েছিলেন। ওঁরা যদি মাইন্ডসেটটা না তৈরি করে দিতেন, তা হলে তো আমি এ ভাবে ভাবতেই পারতাম না। তবে এ ব্যাপারে সমাজেরও একটা অবদান আছে।

মানে, আপনি বলতে চাইছেন সমাজের লালচক্ষু আপনাকে উপেক্ষা করেনি, ভাল ভাবেই গ্রহণ করেছে?
নাইজেল: অনেকটাই বলতে পারেন। সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে যখন হন্যে হয়ে একটা চাকরির খোঁজ করছিলাম, তখন কেউ কাজ দেয়নি ঠিকই বা ক্লিনিং-এর ব্যবসাটা যখন শুরু করলাম, তখনও কেউ কেউ বাড়ির বাইরের বারান্দা ক্লিনিং করিয়েই চলে যেতে বলত, ঘরের ভেতর ক্লিনিং করতে দিত না। এই কয়েকটা ছবি বাদ দিলে, ভাল ভাবেই নিচ্ছে বা নিয়েছে বলাই যায়।

আপনি উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে, সেন্ট জেভিয়ার্সের অ্যাকাউন্টেন্সির ছাত্র, ভাই ইউ কে-তে চাকরি করেন, ভাইয়ের বউ ভারতীয় বায়ুসেনার অফিসার এ রকম পরিবার, পরিবেশ থেকে কী ভাবে অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন?
নাইজেল: ভুল চয়েসই আমাকে অপরাধমূলক কাজকর্ম করতে উৎসাহিত করেছিল। আসলে কী জানেন তো, ‘ভুল’টা যদি ভুল না বুঝতে পারেন, তা হলে ওই ‘ভুল’টাই বার বার করতে থাকবেন। এটা এক রকম নেশার মতো।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

নাইজেল: আমার ‘কলকাতা ফেসিলিটিজ ম্যানেজমেন্ট’ সংস্থাটাকে আরও বড় করা। একটা ট্রেনিং ইন্সটিটিউট খোলা, যেখানে জেল থেকে বেরোনো মানুষদের নিয়ে ৬ মাসের একটা ট্রেনিং দিয়ে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজে প্রত্যেককে নিযুক্ত করা।

আচ্ছা, এর পর কোনও চিত্রপরিচালক যদি আপনার কাছে অভিনয়ের জন্য অফার নিয়ে আসেন, করবেন?
নাইজেল: এখন পস্তাচ্ছি। এই ছবিটা না করলেই বোধ হয় ভাল হত (হাসি)। এর মধ্যেই তিনটে অফার ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে পারছি না। ভবিষ্যতে করতেও পারি, আবার নাও করতে পারি, ঠিক নেই।

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে কত দিন ছিলেন?
নাইজেল: ৫ বছর, আর আলিপুরে বছর চারেকের মতো।

আপনি কি মনে করেন, প্রতিটি সংশোধনাগারের কালচারাল থেরাপির মাধ্যমে ট্রান্সফর্ম করে রি-হ্যাব করলে দেশে অপরাধ বা অপরাধীর সংখ্যা কমবে?
নাইজেল: নিশ্চয়ই। বাল্মীকি প্রতিভার পর সংশোধনাগার থেকে খুশি হয়ে আসামিদের বাড়ি যাওয়ার জন্য ৫ দিনের প্যারোলে ছুটি দেওয়া হয়। ঠিক পাঁচটা দিন কাটিয়ে কিন্তু সবাই আবার ফিরে আসে। ওরা তো চলে যেতে পারত। কিন্তু যায়নি। কারণ, ওরাও চাইছে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে। জেলের ভেতরে যত দিন আছে, তত দিন ঠিক আছে, যেই জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে এল, তখন রিহ্যাবিলিটিশনটা দরকার।

নাচ-গান, আবৃত্তি-নাটকের মাধ্যমে যদি সংশোধনই করা হবে, তা হলে ধর্ষক-খুনিদের শাস্তিটা কোথায় হল?
নাইজেল: জেলে যাওয়াটাই তো একটা শাস্তি। জেলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তো আর সাজা হচ্ছে না। আন্ডার ট্রায়ালে থাকতে হয় ৪-৫ বছর। কারও যাবজ্জীবন সাজা হলে তো কথাই নেই! এতগুলো বছর বাড়ির লোক, আত্মীয়স্বজনকে ছেড়ে থাকাটাও তো একটা বিরাট শাস্তি।
আপনার বাড়িতে কে কে আছেন?
নাইজেল: মা, ভাই, ভাইয়ের বউ, ভাইপো।

আপনি তো খুব ভাল রাগবিও খেলতেন, না?
নাইজেল: হ্যাঁ, রাগবি খেলতাম লা মার্টিনিয়ার্স ওল্ড বয়েজ ব্ল্যাক-এর হয়ে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাও খেলেছি।

সংসার পাতবেন কবে?
নাইজেল: মায়ের তো খুব ইচ্ছে তাড়াতাড়ি একটা কিছু ব্যবস্থা করার। মা দু’বছর সময় দিয়েছেন। কিন্তু প্রেম করার সময় কোথায়। এ ব্যাপারে এখন আমার দুটো মা ভাবছেন, আমার কোনও টেনশন নেই।


• খবরে প্রকাশ, শীঘ্রই জনগণনার মতো গরু-মোষ, হাঁস-মুরগিও গোনা হবে। খুব ভাল। কিন্তু প্রশ্ন হল, যাঁরা মানুষ হয়েও গরু-ছাগলের মতো জীবন কাটাচ্ছেন, তাঁদের গোনা হবে কি?
অরিজিৎ দাস। হাবড়া

• সি পি এমের যুব সংগঠন ডি ওয়াই এফ-এর সদস্য সংখ্যা চল্লিশ লক্ষ কমে গিয়েছে! এতে কেউ অবাক হচ্ছেন না। কারণ, এই বাংলার সি পি এম প্রবর্তিত ‘মার্ক্সবাদ’ এখন আর ‘বিজ্ঞান’ নয়; জাস্ট ‘ইতিহাস’! তাই ইতিহাসের চর্চা হয় বটে, কিন্তু কেউই ‘ইতিহাস’ হতে চায় না যে!
বাপী ঘোষাল। ব্যান্ডেল

• দেখা যাচ্ছে সব কিছু নীল করতে বর্তমান সরকারের প্রায় পাঁচ বছর কেটে যাবে, আবার সেগুলোকে লাল করতে ভবিষ্যৎ সরকার আরও পাঁচ বছর লাগাবে। অতএব, উন্নয়ন শূন্য!
পার্থসারথি রায়। কলকাতা-৯৭

• রাজ্যের বাস হোক বা দেশের রেল, তৃণমূলের একটাই সুর: আমার যেমন ভাড়া তেমনি রবে, ভাড়া বাড়াব না...!
গীতা সরকার। ফুলবাগান

• ‘পাগলু-টু’, ‘জিসম-টু’, ইউ পি এ-টু লাট্টুর মতো ঘুরপাক খেয়ে একই জিনিস কেন ফিরে ফিরে আসছে বলুন তো? এ যেন রি-মেকের ‘মুক্তধারা’র যুগ চলছে!
ল্যাংড়া সরকার। বর্ধমান

• নিন্দুকেরা বলে, সিপিএম সরকার থাকলে, আলিপুর চিড়িয়াখানায় ‘লাল’ ক্যাঙারুদের অকালে মরতে হত না!
দীপঙ্কর মান্না। চাকপোতা

• ১ম বন্ধু: অনেক দুর্গাপুজোতেই দেখছি এখন খুঁটিপুজো হচ্ছে। কেন বল তো?
২য় বন্ধু: অন্যান্য দেবদেবীর চেয়ে এই দেবীর খুঁটির জোর বেশি বলেই হয়তো!
ইমন দাস। রবীন্দ্রপল্লি

• এখন দ্রুততম ‘শত-রান’ আর ‘দ্বিশত রান’-এর কথা ভাবলে উসেইন বোল্টের কথাই মনে আসছে!
স্বপন দত্ত। নারকেলডাঙা

• লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় প্রতিযোগীরা বোধ হয় ইচ্ছে করে মেডেল নিলেন না! কারণ, তাঁদের ভয় পদক আনলে যদি তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদকের মতো চুরি যায়!
শাশ্বত গুপ্ত। কলকাতা-৩২

• যে যা-ই বলে বলুক, লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় হকি দলের ‘ফুল’মার্ক্স বারোর মধ্যে বারোতম!
চঞ্চল পাল। শ্যামবাজার

সত্যি কত দিন আগের কথা। কিন্তু এখনও কেমন স্পষ্ট মনে পড়ে। আসলে কিছু স্মৃতি বোধ হয় গোটা জীবন ধরে জ্বলজ্বল করে। বয়েস তার ওপরে কোনও ভাবেই বিস্মৃতির পলি জমাতে পারে না।
সত্তর দশকের মাঝামাঝি। স্কুলে পড়ি। নাটকে অভিনয় শুরু করেছি। চোখে স্বপ্ন শম্ভু মিত্র হব, অজিতেশ হব, রুদ্রপ্রসাদ হব। এরই মধ্যে অজিতেশ অভিনীত দু’টি নাটকে একটি রেকর্ড বেরোল ‘নানা রঙের দিন’, ‘তামাকু সেবনের অপকারিতা’। ‘নানা রঙের দিন’ শুনে পাগল হয়ে গেলাম। এটা মঞ্চস্থ করবই। কিন্তু রেকর্ডের গায়ে লেখা সাবধানবাণী: অভিনেতার অনুমতি ছাড়া এই নাটক মঞ্চস্থ করা যাবে না। কোথায় পাব অজিতেশের অনুমতি!
সুযোগ এসে গেল। স্থানীয় একটি রঙ্গমঞ্চে একটি অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হয়ে এলেন। অন্ধকারে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে তিনি বেরোলেন। রিকশা ঠিক করাই ছিল। তিনি রিকশায় বসলেন (হ্যাঁ, তখন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরাও রিকশায় স্টেশন যেতেন, ট্রেনে বাড়ি ফিরতেন)।
পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম। তিনি বললেন, ‘ছি, ছি, পায়ে হাত দিচ্ছ কেন, ভাই?’ করজোড়ে মিনতি জানালাম।
হা হা করে সেই প্রাণখোলা হাসি, ‘আরে, ও সব রেকর্ডে লিখতে হয়। কোনও অনুমতির দরকার নেই। আমার চেয়েও ভাল করবে।’ এই বলে দুটো হাত আমার মাথায় বুলিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম।
কেটে গিয়েছে বহু বছর। ‘নানা রঙের দিন’ আমার আর মঞ্চস্থ করা হয়নি। আমি এখন পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রৌঢ়ত্বে। সংসার আর কর্মক্ষেত্রই আমার জীবন। আমার নানা রঙের দিনেরা এখন শুধুই সাদা-কালো। তবু এরই মধ্যে সেই বিশাল দু’টি হাতের স্নেহস্পর্শ যখনই অনুভব করি, চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যায়।
সোজা আঙুলে ঘি ওঠে না, বাঁকা স্টিকে বল।
শূন্যতে শূন্য তাই তোদের ফলাফল।
আঙুর ফল থেকে গেল, সেই এক টক-ই।
নতুন নিম্নতায় নামল ভারতীয় হকি।
ঘুঁটের মালা গলায় দিয়ে ঘুরবি এ বার চল,
ডজনে শেষ জনটি হওয়া ভাঃ হকি দল

বিশ্বনাথ পাল, গড়িয়া
ক্ষমা চাইছি
মায়ের মামাতো ভাই, আমাদের নব মামা। বাড়ি নদিয়াতে হলেও কর্মসূত্রে গুজরাতে থাকতেন। বয়েস প্রায় পঞ্চাশ। মা সেই ছোটবেলায় তাঁকে দেখলেও আমরা ভাই-বোন কোনও দিন তাঁকে চোখে দেখিনি। মায়ের মুখেই ওঁর ছোটবেলাকার গল্প শুনেছি। আর কোনও যোগাযোগও ছিল না। হঠাৎ বছর দুই আগে এক দিন ওঁর সঙ্গে আমাদের ফোনে কথা হয়। তার পর থেকেই নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন। বিশেষ করে আমাকে খুব ভালবাসতেন, ফোন পেলে ছাড়তেন না। কথাও দিয়েছিলেন আমাদের বাড়ি আসবেন বলে। কিন্তু দিনের পর দিন ওঁর এই অজস্র ফোনে বিরক্ত হয়ে গেলাম। প্রতিদিন এক কথা একঘেয়ে লাগত। পরে নানান অজুহাতে ওঁর ফোন এড়িয়ে যাই। উনি বুঝতেও পেরেছিলেন। মাকে অবশ্য বিরক্ত হতে দেখিনি। এর পর মাসখানেক কোনও কথা হয়নি। ভাবলাম বাঁচা গেল! হঠাৎ এক দিন শুনলাম হার্ট অ্যাটাক-এ মামার মৃত্যু হয়েছে। আর দেখা হল না!
ঝুমা সরকার, কোচবিহার

মুখ খোলার, গল্প করার, গলা ফাটানোর
বিভাগ। এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভার আপনাদের।

ই মেল-এ অথবা ডাকে, চিঠি পাঠান।
ই-মেল: chirkut.rabi@abp.in
চিঠি: চিরকুট, রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.