নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ের টোপ দিয়ে স্কুল থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে ৩ যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে মালদহে চাঁচলের আশাপুরে। রাতে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে একজনের মোবাইল ফোনের দোকান রয়েছে, একজন বেকার এবং এক জন চাঁচল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মূল অভিযুক্ত নাজিম আলির বাড়ি চাঁচলের মোবারকপুর- মির্জাতপুর পাড়ায়। তার দুই সঙ্গী অসীম সরকারের বাড়ি লাগোয়া সরকার পাড়ায় ও জীবন দাসের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের বরুই এলাকায়। শুক্রবার ছাত্রীটির ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। ধৃতদের এদিন মালদহ আদালতে তোলা হলে তাদের জামিন নামঞ্জুর হয়ে যায়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। আইন মেনেই সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” বছর ১৫-র ওই ছাত্রীর বাড়ি চাঁচলেরই গৌড়িয়া এলাকায়। শীতলপুর হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে সে। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যায় পরিচিত নাজিম। এ দিনই তাকে বিয়ে করবে বলে প্রলোভন দেখিয়ে অটোতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ২০ কিমি দূরে আশাপুর এলাকায়। সঙ্গে ছিল দুই বন্ধু অসীম ও জীবন। সেখানে ফাঁকা জায়গায় একটি মদের দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই দোকান বন্ধ ছিল। দোকানের পেছনেই রয়েছে সীমানা পাঁচিল ঘেরা খালি জায়গা। দুই বন্ধুকে বাইরে পাহারায় রেখে নাজিম ওই ছাত্রীকে সেখানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এক বাসিন্দা ছাত্রীর সঙ্গে নাজিমকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন। হইচই শুরু হতেই ছুটে যান এলাকার বাসিন্দারা। পরে ছাত্রীটি সহ ৪ জনকেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাতে ছাত্রীর মামা শেখ তসলিম পুলিশে অভিযোগ জানান। যদিও ধর্ষণের সময় মেয়ের চিৎকার শুনেই বাসিন্দারা ছুটে যান বলে ছাত্রীর পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ছাত্রীর বাবা আব্দুর রউফ পেশায় দিনমজুর। তার ৪ মেয়ে ১ ছেলে। মেজো মেয়ে যে স্কুলের ছাত্রী ওই এলাকাতেই বাড়ি ধৃত নাজিমের। স্কুলে যাতায়াতের পথেই বছরখানেক আগে পরিচয়। তা থেকে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শীতলপুর স্কুলে পড়ার সময়েই ধৃত ৩ জনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটির বাবা জানান, মেয়ের সঙ্গে কারও সম্পর্ক ছিল বলে শুনিনি। যারা মেয়ের এতবড় সর্বনাশ করল তাদের কঠিন শাস্তি চাই। ছেলের গ্রেফতারের খবর পেয়ে এদিন থানায় এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন ধৃত জীবনের মা রিনা দাস। তিনি বলেন, “ওরা স্কুলে ৩ জনই একসঙ্গে পড়ত। ও আগে জানলে এরকম কাজে বন্ধুদের সঙ্গ দিত না। ওকে মিথ্যা কথা বলে নিয়ে গিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।” |