অভিযুক্তকে ধরার জন্য ধর্ষিতার স্বামীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মালদহের রতুয়ার এক সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে। জেলার রতুয়া থানার কয়লা পাথর গ্রামের বাসিন্দা তাফাজুল শেখের অভিযোগ, গত ২ অগস্ট তিনি জমিতে সেচের জল দিতে বার হলে প্রতিবেশী এক যুবক তাঁর ঘরে ঢুকে মুখে কাপড় গুঁজে, হাঁসুয়া দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন। এই ব্যাপারে তিনি রতুয়া থানায় অভিযোগ জানালে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়। তাঁর স্ত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। কিন্তু অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি রতুয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর বিকাশ ভদ্রের সাহায্য চাইলে তিনি অভিযুক্তকে গ্রেফতারের বিনিময়ে ১২ হাজার টাকা ‘ঘুষ’ দাবি করেন। তিনি স্ত্রীর কানের দুল বিক্রি করে ৬ হাজার টাকা দিয়েছেন। তার পরেও বাকি টাকার জন্য ওই সাব ইন্সপেক্টর তাঁকে চাপ দিচ্ছেন। শুক্রবার ধর্ষিতার স্বামী তাফাজুল শেখ মালদহের জেলাশাসকের কাছে এই ব্যাপারে ওই সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান। সেই সময়ে জেলাশাসকের দফতরে দেখা হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকেও সমস্ত ঘটনা জানান। নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকারকে বদনাম করার জন্য কিছু পুলিশ অফিসার চক্রান্ত করছে। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের অপরাধ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হবে।” অভিযুক্ত সাব ইন্সপেক্টর অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি ঘুষ নেননি। ওই পুলিশ অফিসার বলেন, “ধর্ষিতার স্বামী মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমি ওই মামলার তদন্ত করছি না। ওই মহিলা কিংবা তাঁর স্বামীকেও চিনি না। উদ্ধেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেউ তাঁদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে।” জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেউ অভিযোগ জানাতেই পারেন। তদন্তে যদি দেখা যায় ধর্ষিতার স্বামীর থেকে পুলিশ অফিসার টাকা নিয়েছেন তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।” ধর্ষিতার অভিযোগ, ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁকে রতুয়া থানায় কয়েকজন পুলিশ অফিসার নানা কটূক্তি করেন। তিনি বলেন, “ধর্ষণকারী গ্রেফতার হবে আশায় সে দিন পুলিশের অপমান মুখ বুজে সহ্য করি। পুলিশ এখনও ধষর্ণকারীকে গ্রেফতার করেনি। অভিযুক্ত বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লোকজনকে বলে বেড়াচ্ছে টাকা দিয়ে পুলিশের মুখ সে বন্ধ করে দিয়েছে।” ধর্ষিতার স্বামীর অভিযোগ, পুলিশের একাংশ তাঁকে অভিযুক্তের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঘটনাটি চেপে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তিনি বলেন, “সুবিচার পেতে জেলাশাসককে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছি। রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকেও সমস্ত ঘটনা বলেছি।” |