আন্ত্রিকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে কাশীপুর ব্লকের ঘুটলিয়া গ্রামে। স্থানীয় কল্লোলী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবারেও আন্ত্রিকে আক্রান্ত ৬ জনকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কম বেশি ৫০ জনের বেশি আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত বলেন, “ওই গ্রামের কয়েকজন আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। গ্রামেও চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে।”
কল্লোলী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শয্যায় শুয়ে থাকা ঘুটলিয়ার বাসিন্দা তরু লোহার বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে পেট খারাপ হয়েছে। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই শুক্রবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছি।” রঞ্জিত সহিস বলেন, “মা এবং ১০ ও ১৩ বছরের দুই ছেলে আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের ভর্তি করেছি। যে ভাবে আন্ত্রিক ছড়াচ্ছে, তাতে আমরা বেশ আতঙ্কে রয়েছি।” ওই গ্রামের বাসিন্দা সাত্তার আনসারি জানান, গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ স্থানীয় একটি নদীর জল পান করেন। তাঁদের অনুমান, নদীর জল থেকেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়দের একাংশের অভিযোগ, এখানে ওষুধ মিলছে না। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।” |
ডিওয়াইএফের কাশীপুর জোনাল সম্পাদক সজল গোস্বামীর দাবি, “ঘুটলিয়ায় আন্ত্রিক ছড়িয়ে পড়ার খবর স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ছিল না। ওই গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আমরাই ব্লক মেডিক্যাল অফিসারকে খবর দিই।” তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতিতেই আন্ত্রিক ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর আগে নজর দিলে পরিস্থিতি এমন হত না। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া বৃহস্পতিবার রাত্রে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “ঘুটলিয়ায় দু’টি নলকূপ থাকলেও তা বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। নলকূপের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাসিন্দারা এখন নদীর জল পান করছেন। মনে হয়, ওই দূষিত জল পান করায় তাঁরা আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন।” তিনি জানান, আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি। কাশীপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামকৃষ্ণ হেমব্রমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, “অবস্থা এখন নিয়ন্ত্রণে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্যালাইনও যথেষ্ট রয়েছে।” |