জমি দখলের নালিশ বাম নেতার নামে
স্কুলের জমি দখল করে বাড়ি ও রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কৃষক সংগঠনের এক নেতার বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার বাসিন্দা রাঙাপানি প্রাথমিক হাইস্কুলের ওই অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নাম সন্তোষ রায়। দীর্ঘদিন তিনি ওই এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, একটা সময় সন্তোষবাবুর কথাই ছিল ওই এলাকার শেষ কথা। কারও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ছিল না। সন্তোষবাবু দার্জিলিং জেলা সিপিএমের এক প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ ই এলাকায় তাঁর একক দাপট ছিল বলে অনেকেই দাবি করেছেন। রাজ্যে পরিবর্তনের পর সেই সন্তোষবাবুর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসন তো বটেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। সন্তোষবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এই স্কুলেই দখলের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: কার্তিক দাস।
তিনি দাবি করেন, এলাকার উন্নয়নে তিনি সবচেয়ে বেশি সচেষ্ট। এই জন্য কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও বাদশা ঘোষাল জানান, ওই বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলছে। ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতরের তরফে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রাঙাপানির বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, সন্তোষবাবু স্কুলের জমি দখল করে দোতলা বাড়ি তৈরি করেছেন। ওই বাড়িতে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্কের একটি শাখা খোলা হয়েছে। ব্যাঙ্কে যাতায়াতে সুবিধের জন্য জায়গা দখল করেই একটি নতুন রাস্তা তৈরি করেছেন। আর স্কুলের জমি মিলিয়ে দেওয়ার জন্য সন্তোষবাবু এলাকার এক বাসিন্দা জহরলাল সাহার জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগও রয়েছে। তা নিয়ে মামলাও চলছে। পাশাপাশি, স্কুল সংলগ্ন বহু পুরনো একটি রাস্তাও তিনি দখল করেছেন বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও এলাকায় বেশ কয়েকটি সরকারি জায়গা দখল করে ভবন তৈরি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। সন্তোষবাবুর দাবি, স্কুলের জমির একাংশ জলহরলালবাবু সহ বেশ কয়েকজন দখল করে সেখানে দোকান তৈরি করেছেন। এখন স্কুলের আরও জমি দখলের জন্য মিথ্যে অভিযোগ তুলছেন। আর এতদিন কেন অভিযোগ তোলা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তিনি বলেন, “১৯৫৪ সাল নাগাদ স্কুলের জন্য এক একর জমি দান করেন এলাকার দুই ব্যক্তি। সেই জমিতে স্কুল রয়েছে। তার দলিল আমাদের কাছে রয়েছে। সেখানেই আমরা নতুন ভবন তৈরি করছি। বাকি যারা স্কুলের জমি দখল করে রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” জালাস-নিজামতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা এলাকার সিপিএম নেতা আনন্দ রায় বিষয়টি নিয়ে সন্তোষবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি যতদূর জানি, স্কুলের জমি কয়েকজন ব্যক্তি দখল করে রয়েছেন। সন্তোষবাবুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৯৫০ সাল থেকে প্রাথমিক স্কুলটি রাঙাপানিতে চলছে। এলাকার দুই বাসিন্দা স্কুলকে তিন একর জমি দান করেন। সেই জমিতে পরে ভবন নির্মাণ করা হয়। জহলরলালবাবুর ছেলে গুড্ডুর দাবি, ১৯৯২ সালে সরকারের তরফে তাদের ২ কাঠা জমির পাট্টা দেওয়া হয়। সেই জমির অংশ দখল করা হয়েছে। তিনি বলেন, “সেই সময় কেউ প্রতিবাদ করলে আক্রান্ত হতে হত। ভয়ে আমরা কোথাও অভিযোগ জানাইনি।” এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ নৌসাদ অভিযোগ করে বলেন, “আমরা জন্মের পর থেকে যে রাস্তা ধরে মূল বাজারে যেতাম তা দখল করে নিয়েছেন ওই সিপিএম নেতা। তাঁর পরিবারের ব্যবহার এবং ব্যাঙ্কের সুবিধের জন্য বাড়ির সামনে রাস্তা তৈরি করেছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.