|
|
|
|
জিয়াগঞ্জের রাস্তা বেহাল, দুর্ভোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
পুরসভার উন্নয়ন প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক অতীতেও বহরমপুরের সঙ্গে প্রাচীন বাণিজ্য শহর জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের তুলনা চলত। ভাগীরথীর পাড়ে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক ওই দু’টি পুরসভার উন্নয়ন ও অনুন্নয়নের বিষয়ে গত দু’দশকের মধ্যে লাগাতার ধর্মঘট, কর্মী ছাঁটাই, আন্দোলন-সহ যাবতীয় ঘটনাক্রমের মধ্যে বিস্তর মিল রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে কংগ্রেস দেড় দশক ধরে তুরুপের তাস হিসাবে বহরমপুর পুরসভাকে তুলে ধরে। তার পাল্টা দিতে গত এক দশক ধরে সিপিএমও কিন্তু জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভাকেই উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরে। সেই সাধের পুরসভার রাস্তায় এখন চলাফেরা করা দূরের কথা, কিছু এলাকায় পা ফেলায় দায় হয়ে উঠেছে।
জিয়াগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুল শিক্ষক সমীর ঘোষ বলেন, “শহরের রাস্তায় বড় বড় গর্তে বৃষ্টির জলে জমে যাওয়ায় পথচারী বুঝতে পারছে না কোনটা সমতল, কোনটা গর্ত।” স্টেশন রোডের গোডাউন এলাকা, রেল কোয়ার্টার এলাকা, লন্ডন মিশন রোডের ঈদগাহ মসজিদের সামনে, ভেল্লাডাঙার গিরিধারী মন্দিরের সামনে, সৌদুগঞ্জের নবযুবক সংঘ ক্লাবের সামনে ও এনাতুলিবাগের হঠাৎপাড়া ক্লাবের লাগোয়া এলাকায় রাস্তার চিহ্ন মাত্র নেই। সব পুকুরের আদল নিয়েছে। শহরের রাস্তার ওই সব মরণ ফাঁদ মেরামতির দাবি জানিয়ে মাস দেড়েক আগে জিয়াগঞ্জ টাউন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পথ অবরোধও করা হয়েছিল। মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সম্পাদক মনোজ সরকার জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। মনোজবাবু বলেন, “স্টেশন, লন্ডন মিশন হাসপাতাল, জিয়াগঞ্জ গ্রামীন হাসপাতাল, রাজা বিজয় সিংহ স্কুল ও কর্মাস কলেজে যাওয়ার অন্য কোনও বিকল্প ভাল রাস্তা নেই। ফলে দুর্ঘটনা অবশ্যম্ভাবী জেনেও মানুষ বাধ্য হয়ে ওই সব ভাঙাচোরা রাস্তা ব্যবহার করছেন। ফলে হরদম দুর্ঘটনা ঘটছে।” নির্দল প্রতীকে জেতা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের পুরপ্রধান শঙ্কর মণ্ডল অবশ্য সি পি এমের লালবাগ জোনাল কমিটির সদস্য। শঙ্কর মণ্ডল বলেন, “বিগত বাম সরকারের আমলে পুরমন্ত্রী রাজ্যের ১২১টি পুরসভার পুরপ্রধানদের নিয়ে ৩-৪ মাস অন্তর বৈঠক করতেন। ওই বৈঠকে বিভিন্ন পুরসভার পক্ষে থেকে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দের জন্য সরাসরি পুরমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানো যেত। কিন্তু বর্তমান জোট সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর ১৩-১৪ মাস কেটে গেলেও পুরমন্ত্রী পুরপ্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেননি। ফলে কোথায় আর্জি জানাব?” অর্থ বরাদ্দের ব্যাপারে রাজনৈতিক রাজনৈতিক পক্ষপাতও শুরু হয়েছে বলে শঙ্করবাবুর দাবি। তিনি বলেন, “ট্রাইডেন্ট আলো দিয়ে রাজপথ আলোকিত করার জন্য মধ্যমগ্রাম ও বারাসত-সহ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ১২টি পুরসভাকে সম্প্রতি ২৫ লক্ষ টাকা করে সরকার বরাদ্দ করেছে। কিন্তু জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভাকে একটি টাকাও দেয়নি।” মনোজবাবুর পাল্টা দাবি, “জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের পানীয় জলের প্রকল্প এবং বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে অন্তত ১২ কোটি টাকা নয়ছয় করেছেন জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরকর্তারা। ওই কারণে রাজ্য পুরদফতর এই পুরসভাকে টাকা বরাদ্দ করেনি।” |
|
|
|
|
|