|
মুখোমুখি ২... |
|
শ্রেয়ার-আমার সম্পর্ক... লতাজি, আশাজির মধ্যেও তুলনা হত |
বললেন সুনিধি চহ্বাণ। প্রতিদ্বন্দ্বী না সহকর্মী তাঁরা?
জেনে নিলেন শতরূপা বসু |
পত্রিকা: বাংলায় একটা কথা আছে। ‘বিয়ের জল’ গায়ে পড়া। আপনি যে রকম ঝলমল করছেন তাতে তো সেটাই মালুম হচ্ছে। |
সুনিধি: (হাসতে হাসতে): অবশ্যই। বিয়ে তো একটা স্পেশাল ব্যাপার। সবাইকেই ঝলমলে করে। কিন্তু বিয়েই একমাত্র কারণ নয়। বিয়ে ছাড়াও নানা ঘটনা ঘটছে। খূব এনজয় করছি। লাইফ ইজ বিউটিফুল। আমি তৃপ্ত। খুশিও। নানা নতুন কাজ করবার জন্য মুখিয়ে আছি।
|
পত্রিকা: বুঝলাম। আপনি তো ছোটবেলার বন্ধুকে বিয়ে করলেন। |
সুনিধি: ঠিক ছোটবেলার বন্ধু না। তবে যাকে আমি গত দশ-বারো বছর ধরে চিনি। আমি খুশি যে এক বন্ধুকে বিয়ে করলাম।
|
পত্রিকা: বিয়ের অভিজ্ঞতা তো খুব ভাল নয় আপনার। দ্বিতীয় বার কোথা থেকে সেই বিশ্বাস ফিরে পেলেন? |
সুনিধি: সেটাই তো জীবন। সব কিছুরই নির্দিষ্ট সময় আছে। এটাও সে রকমই। সব থেকে বড় ব্যাপার আমি খুব হ্যাপি গোটা ব্যাপারটাতে। আর ও খুব ভাল এক জন মানুষ। আমরা ভাল আছি একসঙ্গে।
|
পত্রিকা: তার মানে লাইফ সেটল্ড? |
সুনিধি: বলতে পারেন। আই অ্যাম কিপিং মাই ফিঙ্গারস্ ক্রসড। (হাসি)
|
পত্রিকা: মাঝখানে, আপনার আগের বিয়ের ডিভোর্সের ঝামেলার জেরে আপনার কেরিয়ার তো ভেসে যেতে বসেছিল... |
সুনিধি: ওটা নিয়ে কোনও কথা বলতে চাই না প্লিজ।
|
পত্রিকা: বেশ। সেই সময়টাতে শ্রেয়া ঘোষাল অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন। |
সুনিধি: আপনি কোন সময়ের কথা বলছেন বলুন তো?
|
|
পত্রিকা: ওই সময়টা যখন আপনি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিলেন। আপনার কোনও গানই আমরা আর শুনতে পেতাম না। |
সুনিধি (একটু চুপ করে থেকে): আমার সেটা মনে হয় না। কারণ বছরের প্রায় প্রত্যেক মাসে আমি নতুন গান গেয়েছি। গাইছি। তবে হ্যাঁ, আপনি যদি ‘শীলা কী জওয়ানি’র মতো গানের কথা বলেন, নট নেসেসারিলি সব গান ‘শীলা...’র মতো ব্লকবাস্টার হিট হবে। (থেমে) আমার মনেও পড়ে না কবে আমি গান গাওয়া থামিয়েছি। লক্ষ করলে দেখবেন প্রায় প্রতি দ্বিতীয় বলিউড ছবিতেই আমি গান গেয়েছি। ডেফিনিটলি সেই গান হয়তো ‘শীলা’ হয়নি। কিন্তু গাইছি।
|
পত্রিকা: তাহলে আমরা আপনার সেই সব গান শুনিনি কেন? |
সুনিধি: কারণ সেগুলো ভাল করে প্রোমোটই করা হয়নি।
|
পত্রিকা: কেমন লাগছে শ্রেয়া ঘোষালের শহরে এসে? |
সুনিধি: এটা শ্রেয়ার শহর?
|
পত্রিকা: ইয়ে, মানে, আপনি জানেন না? |
সুনিধি: (প্রচণ্ড অবাক হয়ে) কই না তো!
|
পত্রিকা: ও। |
সুনিধি: (কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে): আই ফিল গ্রেট! ওয়ান্ডারফুল! শি ইজ আ ওয়ান্ডারফুল আর্টিস্ট।
|
পত্রিকা: আপনার সঙ্গে ওঁর যোগাযোগ কেমন? কথা হয়? |
সুনিধি: আমিও মানুষ। ও-ও মানুষ। আমরা একই দুনিয়ার বাসিন্দা। গানের দুনিয়া। যেখানে ও কাজ করছে। আমিও কাজ করছি। আমি আমার জীবন চালাচ্ছি। ও-ও ওর জীবন চালাচ্ছে।
|
পত্রিকা: বাবারে! কী কোল্ড! |
সুনিধি: হাহাহাহাহা....
|
পত্রিকা: একটা মত আছে আপনি শ্রেয়া ঘোষালের থেকেও ভার্সেটাইল। এক দিকে আপনি ‘শীলা কি জওয়ানি’ যেমন গাইতে পারেন, অন্য দিকে ‘আ জারা...’র মত গানও হ্যান্ডেল করতে পারেন। দু’টোই সুপারহিট। |
সুনিধি: এই ব্যাপারে আমি কোনও মম্তব্য করতে চাই না। শ্রোতারাই সেটা বিচার করবেন। সে তো আশাজি সঙ্গে লতাজিরও চিরকাল তুলনা হয়ে এসেছে। প্রত্যেক শিল্পীরই একটা নিজস্ব স্টাইল থাকে। এখন আর সেই দিন নেই যে এক জন শিল্পীই সব রকম গান গাইছেন। একটা ছবিতেই তো কত জন গাইছেন। তাঁদের প্রত্যেকের স্টাইল স্বতন্ত্র। প্রত্যেক সিডিতে নতুন নতুন গায়ক-গায়িকা থাকছেন। তাই এই তুলনাটা বোধহয় ঠিক না। এটা মেনে আমাদের খুশি হওয়া উচিত যে এত ভিন্ন রকমের ট্যালেন্ট আছে এবং জায়গা করে নিচ্ছে এই ইন্ডাস্ট্রিতে।
|
|
পত্রিকা: হুম। শপিং করেছেন কলকাতায়? |
সুনিধি: না। এখনও করা হয়নি। আমি এত বার এসেছি কলকাতায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এক বারও বেরোতে পারিনি শপিং করতে। বা ঘুরতে। যখনই এসেছি শো’য়ের জন্যেই এসেছি। কিন্তু বেরোতে পারলে ভালই হবে।
|
পত্রিকা: একটা ব্যাপার খুব জানতে ইচ্ছে করে। আপনার গানে সাংঘাতিক প্যাশন থাকে। প্রায় রকস্টারের মতো। তুলনায় আপনার জীবন কিন্তু বেশ পানসে। এটার রহস্যটা কী? |
সুনিধি: আমি জানি না কী করে সেটা হয়। এটাই বলতে পারি যে আমি গান গাইতে ভীষণ ভালবাসি। এটাই আমার প্যাশন। নিছক চাকরি নয়। আমি গাইছি সেই চার বছর বয়স থেকে। কিন্তু এখনও মনে হয় এই সে দিন শুরু করলাম।
|
পত্রিকা: বুঝলাম। কিন্তু আপাতভাবে আপনার জীবন যেখানে এত নিস্তরঙ্গ। কোনও পার্টিতে যান না। হই-হুল্লোড় না। সেখানে গানে ওই প্যাশন আসে কোথা থেকে? |
সুনিধি: আমিই তো সেটা। আমি নিজেই আসলে সেই প্যাশন। যখন গান গাই তখন মনে হয় পৃথিবীর চুড়োয় উঠে গেছি। সে লাইভ শো’ই হোক বা ছবির জন্য রেকর্ডিং। নিজেকে নিংড়ে দিই। সেই জন্যেই হয়তো এত প্যাশন পান আমার গানে।
|
পত্রিকা: এখন আশাজির (ভোঁসলে) সঙ্গে আপনিও একজন বিচারক ‘ইন্ডিয়ান আইডল ৬’-এ। সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই? |
সুনিধি: সত্যি, এই অভিজ্ঞতার কোনও তুলনাই নেই। প্রতিদিনই শিখছি ওঁর কাছ থেকে। ও রকম এক জন লেজেন্ড। লতাজি, আশাজিএঁদের গান তো প্রায় জন্ম থেকেই রোজ শুনি নিয়ম করে। আশাজির পাশে এক সঙ্গে বসাই তো একটা বিশাল ব্যাপার। আমি এখন সেভেন্থ হেভেন-এ আছি।
|
পত্রিকা: আপনি তো যুব আইকনও। কী বলবেন নতুন প্রজন্মকে? |
সুনিধি: ফোকাসড থাকো। একটা নিজস্বতা তৈরি করো। নিজেকে ভালবাস। সব থেকে যেটা জরুরি সেটা হল নিজের ওপর বিশ্বাস। পৃথিবীর কেউ বা কোনও কিছুই যেন তাতে চিড় ধরাতে না পারে। লোকজন এখানে নানা ভাবে তোমাকে ল্যাং মারার, টেনে নীচে নামাবার ফন্দি আঁটবে। বিশেষ করে তুমি যদি সাকসেসফুল হতে শুরু কর। তারা বলবে, ‘নিশ্চয়ই কিছু গণ্ডগোল আছে তোমার মধ্যে’। খারাপ লাগা তো দূরে থাক। সে সব নিয়ে কোনও মতেই মাথা ঘামানো চলবে না। জাস্ট, যেটা তোমার ভাল লাগে সে দিকে মনপ্রাণ দিয়ে এগিয়ে যাও। |
|