|
|
|
|
পিড়াকাটা-চাঁদড়া, গোদাপিয়াশাল-আনন্দপুর |
অবশেষে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দীর্ঘ দিন পর রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হল পিড়াকাটা ও গোদাপিয়াশালে। পিড়াকাটা-চাঁদড়া ও গোদাপিয়াশাল-আনন্দপুর রাস্তা দু’টি সংস্কারের অভাবে ভেঙেচুরে গিয়েছিল। অনেক দাবি-দাওয়া জানানোর পরে অবশেষে এই দু’টি রাস্তা সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। সব মিলিয়ে প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যে শুরুও হয়েছে। এখন মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বর্ষা শেষ হয়ে গেলেই পুরোদমে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে পূর্ত দফতর জানিয়েছে। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “দু’টি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। এ বার কাজ শুরু হয়েছে।” |
|
নতুন করে তৈরি হবে পিড়াকাটা থেকে চাঁদড়া যাওয়ার এই রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র। |
আনন্দপুর বর্ধিষ্ণু এলাকা। গোদাপিয়াশাল এলাকার চেহারাও আগের থেকে পাল্টেছে। অথচ এই দুই এলাকার সংযোগকারী রাস্তা রয়ে গিয়েছিল সেই আগের মতোই। পিচ উঠে খানাখন্দ তৈরি হয়েছিল অনেক দিন আগেই। গর্তে গাড়ির চাকা ঢুকে দুর্ঘটনা যেমন ঘটত, তেমনই জঙ্গলপথে চুরি-ছিনতাইও বাড়ছিল। এই রাস্তার দু’পাশের একটা বড় অংশেই জঙ্গল রয়েছে। বিকেলের পর ‘ঝুঁকি’ নিয়েই এই পথ দিয়ে চলাচল করতে হয়। সুযোগ পেলে দুস্কৃতীরা চুরি-ছিনতাই করে জঙ্গলে গা-ঢাকা দিত। রাস্তার একাংশ শালবনি থানার অন্তর্গত। বাকি অংশ আনন্দপুর থানার অন্তর্গত। ফলে, অনভিপ্রেত ঘটনার খবর পেয়েও তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসতে পারে না পুলিশ। এলাকা কার, তা নিয়েই দুই থানার মধ্যে টানাটানি চলত। চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা এড়াতে বিকেলের পর পেট্রোলিং শুরু করে পুলিশ। তবে রাত ৯ টার পর আর পুলিশি টহল থাকে না বলেই অভিযোগ। তখন ‘ঝুঁকি’ নিয়ে রাস্তা পেরোতে হয়।
পরিস্থিতি দেখে এক সময় আশপাশের ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে রাস্তাটি সংস্কার করে। এই রাস্তা দিয়ে নাড়াজোল, কেশপুর, আনন্দপুর প্রভৃতি রুটের বাস চলাচল করে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এক সময় এই রুটে বিকেলের পর বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাস মালিকেরা। কিন্তু, স্থানীয় মানুষ বেঁকে বসেন। কারন, এই এলাকার অনেকে মেদিনীপুর শহরে কাজ করতে আসেন। বিভিন্ন দোকানে কাজ করেন। কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফেরেন। বাস ছাড়া যাতায়াতের অন্য কোনও উপায় নেই। তাই বাস না-চললে অনেকে অসুবিধায় পড়বেন। মূলত, কাজের জন্য শহরে আসা মানুষের কথা ভেবেই এখনও বাস চলাচল চালু রয়েছে। আনন্দপুরের পঞ্চায়েত প্রধান দেবাশিস রায় বলেন,“ পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমরাও আগে রাস্তা সংস্কারের দাবি নিয়ে বিভিন্ন দফতরে দরবার করেছি। রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গেলে স্থানীয় মানুষই উপকৃত হবেন।” এক বাস মালিক বলেন, “এখনও ঝুঁকি নিয়েই ওই রুটেই বাস চালাতে হয়। দু’পাশে জঙ্গল থাকার সুযোগ নিয়ে অনেক সময়েই দুষ্কৃৃতীরা পথ আটকে চুরি-ছিনতাই করে।”
আনন্দপুর-গোদাপিয়াশাল রাস্তাটি প্রায় ৮ কিলোমিটার। অন্য দিকে, পিড়াকাটা-চাঁদড়া রাস্তাটি প্রায় ১৩ কিলোমিটার। প্রথম রাস্তাটির জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। অন্য রাস্তাটির জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। রাস্তা সংস্কারের প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে শুরুও হয়েছে। পিড়াকাটা-চাঁদড়ার মাঝেই রয়েছে কলসিভাঙা। এক সময় এই এলাকার আশপাশে মাওবাদীদের প্রভাব বেড়েছিল। প্রায় রোজই নাশকতা হত। কলসিভাঙা দিয়ে মেদিনীপুরেও আসা যায়। রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ থাকায় সমস্যায় পড়তেন স্থানীয় মানুষ। গাড়ি চালকেরাও সমস্যায় পড়তেন। এখান দিয়ে ট্রেকার-লরি চলাচল করে। আগামী এক বছরের মধ্যে এই দু’টি রাস্তা তৈরির কাজ শেষ হবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সময় মতো কাজ হচ্ছে কি না তা দেখতে ‘মনিটারিং’ও করা হবে। |
|
|
|
|
|