দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
|
ভোগান্তি |
নেই বাস |
দেবাশিস দাস |
এ পথে নিত্যযাত্রীর সংখ্যা কয়েক লক্ষ। কিন্তু সরাসরি যাতায়াতের কোনও বাস নেই। ফলে সোনারপুর পুর এবং গ্রামীণ এলাকা থেকে ধর্মতলা যাতায়াত করতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচও বেশি হয়। অথচ প্রতি দিন ওই সব এলাকা থেকে কয়েক লক্ষ যাত্রী ধর্মতলায় যাতায়াত করেন।
সোনারপুর থেকে এসডি-ফাইভ রুটের বাস সরাসরি তারাতলায় যায়।
ভূতল পরিবহণ নিগমের কিছু বাস কলকাতা স্টেশনে যায়। কিন্তু ধর্মতলায় যেতে হলে সোনারপুর এলাকার বাসিন্দারা অটোয় রাজপুর বা গড়িয়ায় এসে বাস কিংবা মেট্রো ব্যবহার করেন। কেউ কেউ আবার ট্রেনে শিয়ালদহ পৌঁছে, তার পরে বাসে ধর্মতলা যান। |
|
এলাকার বাসিন্দা অশোক সান্যাল বললেন, ‘‘আমাকে নিয়মিত ধর্মতলায় যেতে হয়। সরাসরি ধর্মতলা যাওয়ার বাস থাকলে খরচ অনেক কম হত। ভোগান্তিও কমত।” সোনারপুর এবং সংলগ্ন এলাকায় জনবসতি ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বসতি বাড়লেও পরিবহণ ব্যবস্থার তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা মূলত অটো, রিকশা এবং ভ্যানের উপরে নির্ভরশীল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অনেক আগে ‘৮০-বি’ রুটের বাস ধর্মতলা থেকে গড়িয়া হয়ে ভায়া সোনারপুর হরিনাভী যেত। ১২ বছর আগে আচমকা রুটটি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এখন ধর্মতলা যেতে হলে অন্তত দু’বার গাড়ি বদলাতে হয়। |
|
সোনারপুরের প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান এবং বর্তমান কাউন্সিলর সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “সোনারপুরের বাসিন্দাদের কাছে ধর্মতলা যাওয়া একটা সমস্যার বিষয়। এই রুটে যত দ্রুত সম্ভব একটি বাস চালু করা দরকার।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে সোনারপুর সংলগ্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি নতুন রুট চালু করা হয়েছে। যদিও সেগুলি সরাসরি ধর্মতলা যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সমস্যার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করব।” |
|
জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, যে কোনও রুটে নতুন বাস চালানোর ক্ষেত্রে প্রথমে রুটটি লাভজনক কি না খতিয়ে দেখা হয়। রুট লাভজনক না হলে কেউ বাস চালাতে চান না। রুটটি লাভজনক হলে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বাস মালিক সংগঠন ‘বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট’-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপক সরকার বলেন, “সোনারপুর থেকে ইএম বাইপাস হয়ে ধর্মতলা যাওয়ার রুট হলে অবশ্যই মালিকরা সেই রুটে বাস চালাবেন।”
উত্তর সোনারপুরের বিধায়ক এবং পুরসভার উপ-পুরপ্রধান ফিরদৌসি বেগমের কথায়: “বাসিন্দাদের এই সমস্যা আমারও নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট দফতরকেও জানিয়েছি। আশা করছি ব্যবস্থা হবে।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “এটি অতি জনপ্রিয় একটি রুট। নিত্যযাত্রীদের সমস্যার কথা আমরা জানি। ক্ষমতায় আসার পরে এ রুটে বাস চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস মালিকদের সাড়া মেলেনি। কলকাতার বুকে নতুন করে রুট পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা সেই সমস্যা কাটানোর চেষ্টা করছি।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|