|
|
|
|
ফের জলপ্রকল্পের টেন্ডার ডাকার নির্দেশ চন্দ্রকোনায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দ্রকোনা |
টেন্ডার-জট পিছু ছাড়ছে না তৃণমূল পরিচালিত চন্দ্রকোনা পুরসভায়। ফের পুর কর্তৃপক্ষকে জলপ্রকল্পে নতুন করে টেন্ডার ডাকার প্রস্তাব দিয়েছে এমইডি (মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিরিয়ারিং ডাইরেক্টরেট)।
এর আগে এই প্রকল্পেই দু’বার টেন্ডার হয়েছিল। প্রথমবার সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেখে নির্দিষ্ট দিনে এবং সঠিক সময়ে এসেও একটি ঠিকাদার সংস্থা টেন্ডার ফর্ম না-পাওয়ায় বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্ট নতুন করে টেন্ডারের নির্দেশ দিলে গত জুলাই মাসে ফের ওই প্রকল্পের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। নিয়মানুযায়ী, কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করে সমস্ত কাগজপত্র এমইডি-র দফতরে জমা দেওয়ার কথা। এমইডি সবুজ-সঙ্কেত দিলেই তবে পুরসভা ওয়ার্ক অর্ডার দিতে পারবে। দ্বিতীয় বার যে সংস্থা পাইপ সরবরাহ করার জন্য সবচেয়ে কম দর হেঁকেছিলতার কাগজপত্র পুরসভা পাঠিয়ে দেয় এমইডির কাছে। কিন্তু সেই কাগজপত্র দেখে এমইডি কর্তাদের চক্ষু চড়কগাছ। ওই একই সংস্থা স্থানীয় রামজীবনপুর পুরসভাতেও ওই প্রকল্পের পাইপ সরবরাহের বরাত পেয়েছে। কিন্তু পাইপের গুণগত মান একই থাকা সত্ত্বেও রামজীবপুরের চেয়ে চন্দ্রকোনা পুরসভায় বেশ কয়েক লক্ষ টাকা বেশি দর হেঁকেছে তারা। ফলে এমইডি ফের ওই প্রকল্পের জন্য নতুন করে টেন্ডার করার প্রস্তাব দিয়েছে চন্দ্রকোনা পুরসভাকে। এমইডির পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভাগীয় প্রধান জয়দেব মণ্ডল বলেন, “আমি জলপ্রকল্পের জন্য চন্দ্রকোনা পুরসভাকে নতুন করে টেন্ডার করার প্রস্তাব দিয়েছি। দর নিয়ে রামজীবনপুর এবং চন্দ্রকোনা পুরসভায় বিস্তর ফারাক লক্ষ করেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” পুরসভার চেয়ারম্যান রাম কামিল্যা বলেন, “এ বারে তো স্বচ্ছ ভাবেই টেন্ডারের কাজ শেষ হয়েছে। যে সংস্থা সবচেয়ে কম দর দিয়েছিল, তার কাগজপত্রই পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ফের নতুন করে টেন্ডারের অর্ডার এসেছে।” বারবারের জটিলতায় বিরক্ত উপপুরপ্রধান রনজিৎ ভাণ্ডারী ও। এ দিকে বারবার টেন্ডার জটে কাজ আটকে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। চলতি বছরের শুরু থেকেই জলপ্রকল্পের জন্য টাকা এসে পড়ে রয়েছে চন্দ্রকোনা পুরসভায়। কিন্তু বছর শেষ হতে চলল, এখনও কাজ শুরুই করতে পারতে পারেননি পুর-কর্তৃপক্ষ। ১৩৫ বছরের বেশি এই পুরসভায় পানীয় জলের ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। এই প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে ১২টি ওয়ার্ডেই আর পানীয় জলের সমস্যা থাকবে না বলে আশা পুরবাসীর। পুর-কর্তৃপক্ষের একাংশের মতে টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতি চলার কারণেই সমস্যা হচ্ছে। শাসক তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীরও দুর্নীতিতে মদত রয়েছে বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই কাঁচা নর্দমা পাকা করার জন্য টেন্ডার ডাকা নিয়ে স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ ওঠে। মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপে ওই কাজের ক্ষেত্রেও নতুন করে টেন্ডার ডাকতে বাধ্য হয়েছিলেন পুর-কর্তৃপক্ষ। তার জের কাটতে না কাটতেই ফের জলপ্রকল্পের ক্ষেত্রে নতুন করে টেন্ডার করার প্রস্তাব আসায় ক্ষোভ চাড়া দিয়েছে শহরে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকার মানুষ বোর্ডের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। সরব হয়েছে বিরোধী সিপিএমও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “ওই খবর আমি পেয়েছি। ফের টেন্ডার করার মতো পরিস্থিতি কেন হল জানতে দলীয় ভাবে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|