|
|
|
|
আজ শুরু এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলন,
গোপনে কাজ করার ধারা রপ্তে জোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পরিস্থিতি ‘প্রতিকূল’। তাই গোপনে সংগঠনের কাজ করার কথা মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে আগেও। এ বার একেবারে লিখিত ভাবে সেই নির্দেশিকা সংগঠনের কর্মীদের কাছে পেশ করতে চলেছে এসএফআই। আজ, শনিবার ডেবরায় সংগঠনের ৩২তম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনের দলিলে ‘আজকের পরিস্থিতিতে’ কী কী করণীয় তা উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘জেলা কমিটির সদস্যদের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজের ধারা রপ্ত করতে হবে। গোপনে এবং প্রকাশ্যে দুই ধরনের সাংগঠনিক কাজ করাই শিখতে হবে।’ বিষয়টিকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে জেলা রাজনৈতিক মহল। সংগঠন সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার জেলা কমিটির বর্ধিত সভায় আলোচনা হয়েছে। ফলে সম্মেলনের দলিলে বিষয়টির উল্লেখ ‘জরুরি’ বলে মনে করেছেন সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব। |
|
সম্মেলনের প্রচারে মিছিল মেদিনীপুরে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
একটা সময় ছিল যখন জেলার বিভিন্ন কলেজে এসএফআইয়েরই ‘একাধিপত্য’ চলত। রাজ্যে পালাবদলের পরে অবশ্য কলেজ ক্যাম্পাসেও ‘জমি’ হারিয়েছে এসএফআই। প্রভাব বেড়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। এছাড়া একাংশ কর্মী-সমর্থক দলবদল করায় কমবেশি সর্বত্রই এসএফআইয়ের সংগঠন ‘দুর্বল’ হয়েছে।
আর কী কী উল্লেখ থাকছে এই দলিলে? সংগঠন সূত্রে খবর, সংগঠনকে ‘ধরে’ রাখার বিষয়টিই এবার সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। দলিলে বলা হয়েছে, শুধু সভা করলেই হবে না, সভাকে প্রাণবন্ত করতে হবে। নতুন চিন্তার প্রয়োগ ঘটাতে হবে। কমপক্ষে পাঁচটি কাজ, যেমন স্লোগান দেওয়া, বক্তৃতা দেওয়া, পোস্টার লেখা, দেওয়াল লেখা ও মতাদর্শগত চর্চা বাড়াতে হবে। জেলা কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব বন্টন উন্নত করা, মাসিক কাজের রিপোর্ট জমা দেওয়া ও ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা করার কথাও বলা হয়েছে। সংগঠনের জেলা কেন্দ্রও যে কিছুটা ‘দুর্বল’ হয়ে পড়েছিল, তা মেনে নিচ্ছে জেলা নেতৃত্ব।
পেরিয়ে আসা এক বছকে ৩২টি সভা হয়েছে। সভায় নিয়মিত আসার ও আলোচনায় যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একাংশ জেলা সদস্যের ঘাটতি ছিলবলে দলিলে বলা আছে। রয়েছে, “অনেকে অতি সামান্য কারণে সভায় উপস্থিত থাকেননি। তবে কিছু কমরেড সভায় অনুপস্থিতির কারণ আগাম জানানোর অভ্যাস রপ্ত করেছেন।’ এসএফআইয়ের ‘ভিত’ যে নড়েছে এবং দলের ওপর মহলও যে তা মেনে নিয়েছে তা ও থেকে স্পষ্ট। সাধারণত, জেলা সম্মেলনের শুরু বা শেষে প্রকাশ্য সমাবেশ হয়। এ বার ডেবরায় তেমন কোনও সমাবেশ হচ্ছে না। মাঠে ‘লোক ভরানোর’ মতো প্রয়োজনীয় কর্মী-সমর্থক আনা সম্ভব নয় বুঝেই সমাবেশের আয়োজন করা হল না বলে মনে করছেন একাংশ কর্মী। জেলা নেতৃত্ব অবশ্য জানাচ্ছেন, ২২ অগস্ট মেদিনীপুরে সভা, মিছিল হবে। সংগঠনের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “মেদিনীপুরের সভায় বিভিন্ন এলাকা থেকে কর্মী-সমর্থকেরা আসবেন।” এছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে এসএফআইয়ের মধ্যে ‘মতবিরোধ’ বাড়ছে ক্রমশ। এ বার ক্ষোভের আঁচ শুক্রবার সন্ধ্যাতেই পেয়েছেন নেতৃত্ব। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ১৩ জন সদস্য সংগঠনের কার্যালয়ে এক বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে নেতৃত্বের কাছে তাঁদের দাবি, ঝাড়গ্রামের সৌমেন মাহাতো, বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের প্রসেনজিৎ দাসকে জেলার ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পদে বসাতে হবে। দু’জনেই এখন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। ‘আনুগত্য’ নয়, কাজের নিরিখে ‘পদোন্নতির’ দাবি করেছেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|