|
|
|
|
ভবন তৈরির টাকা ফেরত গেল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আমতা |
জমি না-মেলায় ফেরত চলে গেল সঙ্ঘ-ভবন তৈরির ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। ঘটনাটি হাওড়ার আমতা ১ ব্লকের রসপুর পঞ্চায়েতের।
এই এলাকায় রয়েছে এসজিএসওয়াই গ্রুপ-এর মোট ৪৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। তাদের নিয়েই তৈরি হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতভিত্তিক সঙ্ঘ। তাদেরই নিজেদের প্রয়োজনে সঙ্ঘ-ভবন তৈরির জন্য জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে বছর দুই আগে। ভবনে থাকার কথা সঙ্ঘের প্রশাসনিক দফতর। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী যে সব পণ্য উৎপাদন করে সেগুলি বিক্রির জন্য বিপণনকেন্দ্রও করার কথা ছিল সঙ্ঘ-ভবন থেকে।
রসপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে একটি জমি ভবন তৈরির জন্য বরাদ্দ করেন পঞ্চায়েতের কর্তারা। সঙ্ঘ-ভবন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় কল্পতরু স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে। এই গোষ্ঠী ৪৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়া পঞ্চায়েতভিত্তিক সঙ্ঘটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। জমি বরাদ্দ হওয়ার পরে ভবন তৈরি জন্য কল্পতরু গোষ্ঠীর হাতে প্রথম কিস্তির ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার চেক দেয় গ্রামোন্নয়ন দফতর।
কিন্তু ভবন তৈরির কাজ শুরু করতে গিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা জানান, রসপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে ভবন তৈরি হলে তাঁরা সেখানে যাবেন না। তাঁদের যুক্তি, পঞ্চায়েত কার্যালয়টি গ্রামের অনেকটা ভিতরে অবস্থিত। সেখানে সঙ্ঘ-ভবন তৈরি হলে তাঁদের পক্ষে যাতায়াত করতে অসুবিধা হবে। তাঁরা জানান, তাঁদের উৎপাদিত দ্রব্যগুলি বিক্রি করতে হলে রাস্তার ধারে ভবন তৈরি হলেই সুবিধা হয়। কারণ তা হলেই হলেই ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হবে।
কল্পতরু গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে রাস্তার ধারে অন্য একটি বিকল্প জায়গা খুঁজে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সেই বিকল্প জমির ব্যবস্থা হয়নি। শেষ পর্যন্ত রসপুর হাইস্কুলের পড়ে থাকা ফাঁকা জমিতে সঙ্ঘ-ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমিটি পরিদর্শন করার পরে স্কুল পরিচালন সমিতিকে অনুরোধ করা হয় জমিটি কল্পতরু গোষ্ঠীর নামে লিখে দিতে হবে। কিন্তু স্কুল পরিচালন সমিতি জমি লিখে দিতে অস্বীকার করেন। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত পোল্যে বলেন, “জমিতে ভবন তৈরির জন্য আমরা লিখিত ভাবে অনুমতি দিতে রাজি ছিলাম। কিন্তু জমি দলিল করে দিয়ে কারও হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। এ কথা আমরা প্রশাসনকে জানাই।” এই টানাপোড়েনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে নেয় গ্রামোন্নয়ন দফতর।
কল্পতরু গোষ্ঠীর সম্পাদক কনক চক্রবর্তী বলেন, “জমি জোগাড় হল করা গেল না। সরকারি টাকা আমাদের জিম্মায় রেখে কী করব? তা ফেরত দিয়ে দিলাম। সঙ্ঘ-ভবন তৈরি হলে আমাদের উপকার হত। কিন্তু তা আর হল না। প্রধানও বিকল্প জমি খুঁজে দেওয়ার ব্যপারে উদ্যোগী হলেন না।” টাকা যে ফেরত গিয়েছে সে কথা স্বীকার করে নেন রসপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কণিকা ধাড়া। তবে কেন বিকল্প জমি খোঁজার ব্যাপারে তাঁরা উদ্যোগী হলেন না সে, বিষয়ে মন্তব্য করেননি। আমতা ১ বিডিও মঞ্জুশ্রী মণ্ডল বলেন, “কেন টাকা ফের গেল খোঁজ নেব।” |
|
|
|
|
|