ঝাড়খণ্ডে জোট বদলের ইঙ্গিত, একলা চলার ভাবনা বিজেপি-র
বিজেপি নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ডের জোট সরকারের উপর অনিশ্চয়তার ছায়া ক্রমেই দীর্ঘতর হচ্ছে। পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে রাজ্যের জোট রাজনীতির সমীকরণেও।
পরিস্থিতি এমনই অনিশ্চয়তার দিকে এগোচ্ছে যে বিজেপি নেতৃত্ব আর শিবু সোরেনের জেএমএম-এর উপর ভরসা রাখতে পারছেন না। তাঁদের ভরসা নেই জোটের অন্যতম শরিক আজসুর উপরেও। কারণ জোট সরকারের দুই প্রধান শরিক জেএমএম-আজসু জোটের মধ্যে থেকেও বিজেপি-র বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডের আগামী নির্বাচনে বিজেপি ‘একলা চলা’র নীতি নেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছে। ইদানীং কংগ্রেসের সঙ্গে জেএমএম এবং আজসুর ঘনিষ্ঠতাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন বিজেপি নেতৃত্ব। গত সপ্তাহে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটি বৈঠকে বসেছিল। বৈঠকে রাজ্যের জোট সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধিকাংশ নেতা। সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েও তাঁরা খুব নিশ্চিত নন। এরই প্রেক্ষিতে রাজ্যের ২৪ টি জেলায় একলা চলার মানসিকতা নিয়ে এখন থেকেই দলীয় সংগঠনকে মজবুত করে গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে অধিকাংশের অভিমত। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শিবলাল ঘোষের কথায়, “রাজ্যের জোট সরকারের দুই শরিক জেএমএম এবং আজসুর মতিগতি যথেষ্ট সন্দেহ জনক। এ ভাবে কত দিন জোট সরকার টিকবে, তা-ও অনিশ্চিত। তাই বিকল্প হিসেবে আগামী দিনে একলা চলার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে এখন থেকেই।”
এ ছাড়াও ওই বৈঠকে দলীয় মন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মাস ছয়েক আগেও প্রতি সপ্তাহে বিজেপির দলীয় সদর দফতরে এক জন করে মন্ত্রী ‘জনতার দরবারে’ বসতেন। সাধারণ মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনতেন। এখন মন্ত্রীদের পার্টি অফিসে আসা অনেকই কমে গিয়েছে। বন্ধ ‘জনতার দরবার’-ও। এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “পরের পর কতকগুলি নির্বাচন থাকায় মাস পাঁচেক ধরে মন্ত্রীদের ‘জনতার দরবারে’ বসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই ফের দলীয় কার্যালয়ে মন্ত্রীদের ‘জনতার দরবার’ চালু করার চেষ্টা হচ্ছে।”
কেন এই অবিশ্বাসের বাতাবরণ? চলতি বছরের গোড়ার দিকে ঝাড়খণ্ডে রাজ্যসভার দু’টি আসনের নির্বাচনকে ঘিরে শরিকি লড়াইয়ের শুরু। সরকারের তিন প্রধান শরিক—বিজেপি, জেএমএম এবং আজসু আড়াআড়ি দু’টি শিবিরে ভাগ হয়ে যায়। বস্তুত, রাজ্যসভার নির্বাচনে জোট সরকারের মধ্যেই বিজেপি একা হয়ে যায়। বিজেপি’র বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয় জেএমএম-আজসু। ফল: বিজেপি প্রার্থীর হার।
বিজেপির বিরুদ্ধে একই কায়দায় জেএমএম-আজসু জোট বাঁধে হাটিয়া বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে-ও। জেএমএমের মদতে বিজেপি প্রার্থীকে পর্যুদস্ত করে হাটিয়া আসন দখল করে আজসু। রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে কিল খেয়ে মুখ বুজেই তা হজম করতে হয়েছে বিজেপিকে। বিজেপির বিরুদ্ধে জেএমএম এবং আজসুর জোট বাঁধার সর্ব শেষ ঘটনা ঘটেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে। কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেয় জেএমএম-আজসু। বস্তুত, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর থেকে ঝাড়খণ্ডের জোট রাজনীতির সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত ক্রমেই স্পষ্টতর হচ্ছে। যার জ্বলন্ত উদাহরণ নাগরির জমি আন্দোলন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে নাগরির অধিগৃহীত জমি কৃষকদের পুনর্দখলের আন্দোলনে সরাসরি মদত দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন জেএমএম প্রধান, শিবু সোরেন। নাগরির কৃষকদের আন্দোলনের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছেন আজসু নেতৃত্ব-ও। ফলত, রাজ্য-রাজনীতিতে ক্রমশই এক ঘরে হয়ে পড়েছে বিজেপি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.