বকেয়া মেটায়নি পুলিশ। তাই কাজ করবে না পূর্ত দফতর। আবার, পূর্ত দফতরের জায়গা বলে কাজ করবে না পুরসভা। ফলে অনেকটা ‘ভাগের মা’-এর অবস্থা বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশ আবাসনের বাসিন্দাদের। বৃষ্টির জমা জল নামছে না। সেই জমা জলে এসে মিশছে বিভিন্ন ফ্ল্যাটের নিকাশির জল। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, বাড়ছে মশার উপদ্রব। পরিস্থিতির শিকার হয়ে এমনই ‘নরকযন্ত্রণার’ মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে পুলিশ আবাসনের বাসিন্দাদের।
সল্টলেকের সবক’টি থানাই পূর্ত দফতরের অধীনে। পূর্ত দফতরের অভিযোগ, থানার রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি বকেয়া পড়ে রয়েছে বিধাননগর পুলিশের কাছে। ফলে বিধাননগর (উত্তর) থানার কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ত দফতরের বিধাননগর সার্কেলের ৩ নম্বর ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সৌমেন পাল।
কিন্তু বকেয়া বাকি বলে কি জরুরি পরিষেবাও দেওয়া হবে না? সৌমেনবাবু বলেন, “লিখিত ভাবে না জানালে পূর্ত দফতর কাজ করতে পারে না। আর ওই থানা থেকে আমাদের কাছে জল জমার ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। না হলে জরুরি পরিষেবার কাজ সাধারণত আটকে থাকে না।” |
বিধাননগর (উত্তর) থানা চত্বরে ওই আবাসনের পাশেই পুলিশ ব্যারাক। জল না নামায় থানার প্রতিটি নিকাশি নালার মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পুলিশকর্মীরাও। থানার ইনস্পেক্টর-ইন-চার্জ দিলীপ হাজরার অভিযোগ, পূর্ত দফতরকে খবর দিলেও কাজ হয় না। ফলে থানার তহবিল থেকেই সংস্কারের কাজ করা হয়।
সরকারি দফতরের এই ‘ঠেলাঠেলি’র খেসারত দিচ্ছেন বাসিন্দারা। জল না নামায় চারদিকে দুর্গন্ধময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে আবাসনের বাসিন্দারা দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিধাননগর পুরসভারও। কিন্তু ফল হয়নি। পুর-চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, ওই আবাসনের বাইরে একটি ভ্যাট ছিল। সেটি পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু থানার ভিতরের জায়গাটি পূর্ত দফতরের। কৃষ্ণাদেবী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পুরসভা অন্যের জায়গায় ঢুকে কাজ করবে না। আবাসনের এক বাসিন্দা রীতা সিংহ বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর বলছে টাকা পায়নি বলে কাজ হবে না। পুরসভা বলছে পূর্ত দফতরের জায়গায় তারা কাজ করবে না। অন্তত ওই জমা জলে একটু ওষুধও ছড়িয়ে দিলে মশা একটু কমত।” সমস্যার কথা তাঁরা বিধাননগরের কমিশনার রাজীব কুমারকেও জানিয়েছেন বলে জানান রীতাদেবী। রাজীববাবু বলেন, “আবাসিকেরা যোগাযোগ করেছেন। বিষয়টি কী ভাবে মেটানো যায় তা দেখা হচ্ছে। টাকা কেন বকেয়া রয়েছে, সেটাও খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।” |