কোর্টেই শাস্তি, কোণে
ঠায় দাঁড়িয়ে হেডস্যার
প্রথমে হাইকোর্ট থেকেই প্রধান শিক্ষককে সোজা জেলে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন বিচারপতি।
শেষ পর্যন্ত শাস্তি কমিয়ে এজলাসের কোণেই দীর্ঘ ক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার বিধান দিল আদালত। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদককে নিয়ে খাড়া দাঁড়িয়ে দণ্ড ভোগ করলেন প্রধান শিক্ষক। শিক্ষকের নির্দেশে ঠিক যে-ভাবে বেঞ্চের উপরে বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বেয়াড়া পড়ুয়াদের!
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা হাইকোর্টে। নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় উচ্চ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ বারবার অগ্রাহ্য করেছিলেন বর্ধমানের নোয়াপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সম্পাদক। শেষ পর্যন্ত তাঁদের হাজির করানোর জন্য বর্ধমান জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নির্দেশ অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক ও সম্পাদককে এ দিন সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাসের এজলাসে হাজির করায় জেলা পুলিশ।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি বিষয়ক মামলাটি দিনের বিচার্য-তালিকার প্রথমেই ছিল। হাইকোর্ট এর আগে স্কুলকর্তাদের বারবার হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেও তাঁরা আসেননি, আইনজীবীর মাধ্যমেও আদালতকে কিছু জানাননি। এ দিন পুলিশ তাঁদের হাজির করানোর পরেও দেখা যায়, তাঁদের হয়ে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি। কারণ তাঁরা কোনও আইনজীবীকে দায়িত্বই দেননি। বিষয়টি জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি জানিয়ে দেন, হাইকোর্ট থেকেই ওই দু’জনকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেবেন তিনি। দিনের পর দিন হাইকোর্টের সময় নষ্ট করা এবং বিচারের কাজ ব্যাহত করার এটাই হবে শাস্তি। সরকারি আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত তখন এই মামলার শুনানির জন্য বেলা ২টো পর্যন্ত সময় দিতে আবেদন জানান।
দুই স্কুলকর্তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন বিচারপতি। কিন্তু তার বদলে স্কুলে দুষ্টু পড়ুয়াদের সামাল দেওয়ার জন্য বেঞ্চের উপরে বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার যে-আদি ব্যবস্থা আছে, তেমনই বন্দোবস্ত করেন। বিচারপতি এজলাসের একটি কোণ নির্দিষ্ট করে দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সম্পাদককে বলেন, “যান, ওই কোণে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন।”
বেলা ২টো পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ও সম্পাদক ওই নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
মামলাটি ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির একটি পদে নিয়োগ নিয়ে। এ দিন শেষ বেলায় বিচারপতি রায়ে জানিয়ে দেন, ২০০২ সালে শ্যামসুন্দর তা নামে যে-ব্যক্তিকে ওই পদে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁর নিয়োগ অবৈধ। চাকরি যাবে শ্যামসুন্দরবাবুর। তাঁর বদলে ওই চাকরি পাবেন আবেদনকারী সুশীল রায়। সুশীলবাবু যাতে কাজে যোগ দিতে পারেন, ১৫ দিনের মধ্যে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
আদালতের খবর, শ্যামসুন্দরবাবু হাইকোর্টে মামলা করে বলেছিলেন, কর্মসংস্থান কেন্দ্রে তাঁর নাম আগে নথিভুক্ত করা সত্ত্বেও তাঁকে ওই স্কুলে নিয়োগের সাক্ষাৎকারে ডাকা হয়নি। হাইকোর্ট তাঁকে সাক্ষাৎকারে ডাকার নির্দেশ দিয়েছিল। সাক্ষাৎকারের ফলাফলে দেখা যায়, যোগ্য প্রার্থীদের তালিকায় প্রথম হয়েছেন শ্যামসুন্দরবাবু। তাঁর চাকরি হয়ে যায়।
তার পরেই অন্যতম প্রার্থী সুশীলবাবু হাইকোর্টে মামলা করে জানান, কর্মসংস্থান কেন্দ্রে শ্যামসুন্দরবাবুর নাম মোটেই আগে নথিভুক্ত হয়নি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কর্মসংস্থান কেন্দ্র নিয়ম মেনেই নাম পাঠিয়েছিল। বিচারপতি তার পরেই স্কুলকর্তাদের ওই পদে নিয়োগের নথিপত্র নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এ দিন আইনজীবী সুমন ঘোষ স্কুলকর্তাদের পক্ষে সওয়াল করেন। আদালতে স্পষ্ট হয়ে যায়, শ্যামসুন্দরবাবুর নিয়োগ যথাযথ নয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.