দুই মেদিনীপুর জুড়ে স্বাধীনতার নানা রং
প্রভাতফেরি, পতাকা উত্তোলন তো ছিলই। স্বাধীনতা দিবস ঘিরে আরও নানা অনুষ্ঠান হল দুই মেদিনীপুরে। কোথাও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, তো কোথাও সাঁতার, কোথাও বস্ত্র বিতরণ আবার কোথাও কৃতী ছাত্র সংবর্ধনা, সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে স্কুল, বেসরকারি সংস্থা৬৫তম স্বাধীনতা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল দুই মেদিনীপুর জেলায়।
বুধবার সকালে তমলুকে জেলা প্রশাসনিক ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকী। ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মলয় হালদার-সহ প্রশাসনের কর্তারা। জেলা পুলিশ লাইনে স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অমিত সিংহ, ভরত রাঠর ,তমলুকের এসডিপিও পারিজাত বিশ্বাস।
হলদিয়ায় স্বাধীনতা দিবস।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ দফতরে পতাকা উত্তোলন করেন সভাধিপতি গান্ধী হাজরা। তমলুক পুরসভা দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পুরপ্রধান দেবিকা মাইতি।
তমলুক পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে তমলুক রামসীতা বারোয়ারি মণ্ডপে শোভাযাত্রা, অঙ্কন প্রতিযোগিতা, যোগব্যায়াম প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, পুরপ্রধান দেবিকা মাইতি। বৃহস্পতিবার এখানে একটি রক্তদান শিবির হয়। তমলুক আর্ট অ্যান্ড কালচার এর উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা হয় তমলুক মহেন্দ্র স্মৃতি সদনে। শহরের লালদিঘি এলাকায় সব্রাইটি সঙ্ঘের উদ্যোগে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা জজ শ্যামলকুমার গুপ্ত, তমলুকের উপ-পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ন রায়।
পাঁশকুড়ার ব্রাডলিবার্ট হাইস্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরি, রাখিবন্ধন ও বৃক্ষরোপণ উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয় এ দিনটি। এছাড়া জেলা কংগ্রেস ,তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
কাঁথিতেও স্বাধীনতা দিবসে নানা অনুষ্ঠান হয়। পুরসভার তরফ থেকে বিভিন্ন দেশনেতাদের মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। কাউন্সিলর ও পুরকর্মীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধন্দিঘীতে বিবেকানন্দ সেবা সঙ্ঘের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন স্থানীয় কাউন্সিলার মিনতি মিশ্র। এ ছাড়া তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় তিনশো পড়ুয়াদের নিয়ে প্রভাফেরিও হয়। স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপিকা সুচিত্রা দাস, তপন মিশ্র, রাজর্ষি পট্টনায়ক প্রমুখ।
এগরা হাসপাতালে রোগীদের ফল-মিষ্টি বিতরণ।
কিশোর নগর ক্লাব ওয়েসিসের পক্ষ থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি ১৫০ জন দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধীদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়। রামনগর ২ ব্লকের করঞ্জীতে সুভাষ বিদ্যাভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগীদের ফলও দেওয়া হয়। এছাড়া শ্রীনিবাস রামানুজনের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভারত সরকারের ২০১২ সালকে গণিত বর্ষ ঘোষণা করা উপলক্ষে একটি পোস্টারও প্রকাশ করা হয়। সুভাষ বিদ্যাভবনের এই অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক সুকুমার মিশ্র, সম্পাদক নন্দগোপাল পাত্র-সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন। মহকুমা পুলিশের পক্ষ থেকে ভূপতিনগর থানা ও খেজুরি থানার হেঁড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকর্মীরা ‘পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রম’ ও ‘কৃষ্ণনগর অনাথ আশ্রম’ এ গিয়ে সেখানকার অনাথ ছেলে মেয়েদের সঙ্গে স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমের আবাসিক ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন মনীষীর প্রতিমূর্তি সেজে প্রভাতফেরিতে যোগ দেয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন ছিল।
এগরাতেও ১৫ই অগস্ট দিনভর চলল নানা অনুষ্ঠান। এগরার ত্রিকোণ পার্কে ইনটাক অনুমোদিত এগরা মহকুমা রিকশা ইউনিয়নের তরফে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়। শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পটাশপুর নার্সারি স্কুল। এগরা থানার উদ্যোগে মহকুমা হাসপাতালে শতাধিক রোগীকে ফল বিতরণ করেন এসডিপিও রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সিআই প্রদীপ সমাদ্দার, ওসি গণেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলিশকর্মীরা। পটাশপুর থানার উদ্যোগে স্থানীয় কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। ভগবানপুর ২ ব্লকের কলমিছাবাড় আলোর সেতু সঙ্ঘের ব্যবস্থাপনায় ও ভসলাগেড়িয়া শোভাময়ী নার্সারি স্কুলের পরিচালনায় এলাকার ৩০ জন দুঃস্থ ছাত্রীকে বই ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়।
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসকের অফিস ও জেলা পুলিশ লাইনে সাড়ম্বরে পালিত হল স্বাধীনতা দিবস। পতাকা উত্তোলনে হাজির ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত থেকে জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী-সহ পদস্থ আধিকারিকেরা। ঘাটালে মহকুমা অফিসে পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি কুসংস্কার বিরোধী প্রচারও করা হয়। তারই সঙ্গে এ দিনই অনলাইনে চালু হল রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট প্রদানের কাজ। ২০ জন আবেদনকারীর হাতে ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ প্রকল্পে তৈরি বাড়ির কাগজপত্র তুলে দেন মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী। ঘাটাল থানার উদ্যোগে ঘাটাল শহরের কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। থানার ওসি বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে নাগরিকের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ। ঘাটাল পুরসভার উদ্যোগে এ দিন শীলাবতী নদীতে সাঁতার প্রতিযোগিতা হয়।

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.