অবৈধ ভাবে বালি তোলা রুখতে গিয়ে ফের হেনস্থা হতে হল জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের।
বুধবার কাঁসাই নদীর পাড়ে অবৈধ ভাবে বালি তোলার খবর পেয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের টিকরপাড়া গ্রামে গিয়ে ঘেরাও হয়ে যান ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা। আর অভিযানে আসবেন নাপ্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাড়া পান তাঁরা। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে ফের তল্লাশিতে যায় প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত ১৪টি বালি বোঝাই গাড়ি আটকও করা হয়। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত বলেন, “থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। আটক গাড়িগুলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও বেশি করে নজরদারি ও তল্লাশি চালানো হবে।” |
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে টিকরপাড়া গ্রামের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার খবর আসে। ‘সিও’ (ক্যারিং অর্ডার) ছাড়াই গাড়ির পর গাড়ি বালি চলে যাচ্ছে শুনে দফতরের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। দেখা যায়, ১৪টি লরিতে বালি বোঝাই হয়ে গিয়েছে। ৬টি লরি তখনও খালি রয়েছে। সব লরিগুলিকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন আধিকারিকেরা। ফেরার সময় রাস্তার মাঝে বেশ কিছু মানুষ গাড়ি আটকে দেন। সরকারি আধিকারিকদের ফিরে যেতে বলেন তাঁরা। সরকারি আধিকারিকেরা তাতে আপত্তি জানালে ঘেরাও করে রাখা হয়। পরে মৌখিক ভাবে আর তল্লাশিতে আসবেন না কথা দিয়ে ঘেরাও মুক্ত হন আধিকারিকেরা। এরপর বিশাল বাহিনী নিয়ে ফের ঘটনাস্থলে যান আধিকারিকেরা। ১৪টি বালি বোঝাই লরিকে ধরতে পারলেও খালি ৬টি লরি আর ধরা যায়নি। ১৪টি লরিই জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসে রাখা হয়েছে।
কাঁসাই নদীতে বেআইনি বালি পাচার চলছে বছরের পর বছর। এর আগে বেআইনি বালি তোলা বন্ধ করতে গিয়ে লিখিত মুচলেকা দিয়েও ফিরতে হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। পরবর্তীকালে বালি খাদান বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করে প্রশাসন। ফলে মোহনপুর সেতু লাগোয়া বা অ্যানিকেত এলাকায় বেআইনি বালি তোলা অনেকটাই বন্ধ করা গেলেও মণিদহ, কঙ্কাবতী-সহ একাধিক এলাকায় বালি তোলা চলছেই। ওই এলাকা থেকে প্রতিদিন ‘সিও’ ছাড়াই গাড়ি-গাড়ি বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে। ৮-১০ লক্ষ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রশাসন। যাতে আর এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য তল্লাশি চালানোর উপর জোর দিয়েছে প্রশাসন। |