আটকে সংস্কার
পুনর্বাসনের ফ্ল্যাটে ভাড়াটে, খালধার সেই বেদখলই
ংস্কারের জন্য খালের পাশ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল পুনর্বাসনের জন্য স্থায়ী আবাসন। কিন্তু সেই আবাসনে পাওয়া ফ্ল্যাটগুলিতে লোক বসবাস করলেও, খালের ধারের জমি ফাঁকা নেই।
২০০৮ সালে কলকাতা এনভায়রন্টমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট (কেইআইপি) পুনর্বাসনের জন্য ফ্ল্যাটগুলি তৈরি করে। কিন্তু বর্তমানে সেই কেইআইপি-রই অভিযোগ, তৈরি ফ্ল্যাটগুলিতে নিজেরা না থেকে অন্যকে বিক্রি করে কিংবা ভাড়া দিয়ে সেই খালের ধারেই সরকারি জমি দখল করে বসে আছেন মানুষজন।
অন্য দিকে মহেশতলা পুরসভার অভিযোগ, খালের ধারে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের দোকান বা বাড়ি নিজেদের নয়। কারও কারও নিজেদের হলেও, অনেকেই ভাড়ায় নিয়েছেন। ফলে যাঁরা ভাড়ায় নিয়েছেন, তাঁদের মালিকেরা কেইআইপি আবাসনে ফ্ল্যাট পাওয়ায়, ভাড়ায় থাকা লোকজনগুলি খালের ধারেই রয়ে গিয়েছে। উল্টে দোকান মালিকেরা নিজেদের অন্যত্র বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কেইআইপি-র তৈরি ফ্ল্যাট নিয়ে, সেটিকে ভাড়া দিচ্ছে।
ফলে সন্তোষপুর-আক্রা ফটক লিঙ্ক রোড লাগোয়া মণিখালি রোডের পাশের জায়গার দখলদারি ওঠানো যাচ্ছে না। আর এই দখলদারির জন্য খালের প্রায় তিন কিলোমিটার অংশ সংস্কার করতে পারছে না কেইআইপি।
মণিখালি খাল সংস্কারের জন্য মহেশতলা পুরসভা এলাকার শম্পা মির্জানগর এলাকায় কেইআইপি-র পক্ষ থেকে তৈরি করা হয় ৩২০টি ফ্ল্যাট। খালের ধারে বসবাসকারী মানুষকে পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য ছবি-সহ কার্ডের ব্যবস্থাও করে কেইআইপি। সেই কার্ড দেখেই বিলি করা হয়েছিল ২৭০টি ফ্ল্যাট। বিশাল এলাকায় মোট দশটি ভবনে তৈরি করা হয় ফ্ল্যাটগুলি। এক-একটি ভবনে রয়েছে ৩২টি করে ফ্ল্যাট। মোট খরচ হয়েছিল আনুমানিক ৫ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা।
কেইআইপি সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটগুলির চাবি প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়ার আগে রেজিস্ট্রি করা হয়। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, কেউ এই ফ্ল্যাট বিক্রি করতে এবং ভাড়াও দিতে পারবে না। কিন্তু অভিযোগ, অনেক ফ্ল্যাটই বিক্রি করা এবং ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, মণিখালির ধারে এখনও দখল করে রয়েছেন দেড়শোর মতো লোকজন। এঁদেরই এক জন অঞ্জন ঘোষ। তিনি খালের ধারের একটি দোকানের মালিক। কিন্তু দোকানটি নিজে না চালিয়ে অন্যকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। আবার আবাসনের ফ্ল্যাট নিয়েও ভাড়া দিয়েছেন। অন্য দিকে ফ্ল্যাটে জায়গা পেয়েছেন, এমন এক আবাসিক বললেন, “খালের ধারে দোকান রয়েছে। সেটি থেকেই রোজগার হয়।”
কিন্তু জানা সত্ত্বেও কেইআইপি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? প্রশ্নের উত্তরে কেইআইপি-র ডিজি সৌম্য গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ফ্ল্যাট তৈরি করে দেওয়ার পরে একটি সমবায় সমিতি তৈরি করে সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। এর পরে যা দেখাশোনা করা, সেটি ওই সমবায়ই করবে।” কেইআইপি-র পক্ষ থেকে আরও জানা গেল, ফ্ল্যাট বিক্রি কিংবা ভাড়া দেওয়া হচ্ছে কি না, তা দেখার ক্ষমতা কেইআইপি-র নেই।
যদিও খালের ধার বরাবর নতুন করে বেদখল হওয়ার ঘটনার জন্য কেইআইপি-কেই দায়ী করেছেন মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের দুলাল দাস। তিনি বলেন, “ফ্ল্যাটের চাবি দেওয়ার আগে কেইআইপি-র উচিত ছিল খালের ধারের বাড়িগুলি আগে ভেঙে ফেলা। তা করেনি। ফলে ফ্ল্যাটের চাবি নিয়েও লোক থেকে গিয়েছে। অন্য দিকে, কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের নজরেও ঘটনাটি এসেছে। শুধু তাই নয়, যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরা আবার গিয়ে ওই খালের ধারেই বসছেন। আমরা দেখছি কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.