সাদা বাড়ির কালো কুকুরটা মনিবের বড্ড প্রিয়। কিন্তু তা হলেও ‘ক্যারিশমা’র মাপকাঠিতে মনিব তাকে কি না ঠাঁই দেবেন নিজের শাশুড়িরও উপরে! সুবক্তা মনিবের এ হেন ‘বেফাঁস’ মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তাই স্বভাবতই প্রশ্নটা উঠেছে ইরাক-আফগান যুদ্ধের দাগ মুছতে সচেষ্ট বারাক ওবামা এ বার কি আক্ষরিক অর্থেই গৃহযুদ্ধের মুখে পড়তে চলেছেন?
গত কাল আইওয়ার ড্যাভেনপোর্টে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে স্বামীর আগেই বলতে ওঠেন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। এর পর মঞ্চে এসে প্রেসিডেন্ট স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রথমেই শুরু করেন মজা করা। আসলে স্ত্রীর সঙ্গে খুনসুটি। কিন্তু ফাঁসলেন সেটা করতে গিয়েই।
ওবামা বললেন, “প্রথমেই আমার স্ত্রীর কথা বলি। ওর এত কথা বলাটা এমনিতে বিশেষ পছন্দ করি না। কিন্তু একটা ব্যাপার স্বীকার করতেই হবে। ক্যারিশমার বিচারে বাড়িতে আমার স্ত্রী-ই সবার উপরে। তার পর আমার মেয়েরা, আমার কুকুর ‘বো’, আমার শাশুড়ি। আর সবার শেষে আমি।”
ব্যস। বলার পর পরই নিজের মোক্ষম ভুলটা টের পান প্রেসিডেন্ট। মুখ ফস্কে যেটা বলে ফেলেছেন, সেটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সঙ্গে সঙ্গেই। বলেন, “আসলে আমার শাশুড়ির ক্যারিশমা অবশ্যই ‘বো’-এর উপরে। আমি ওঁকে খুব ভালবাসি। মিশেলকে তো ঠিক ওঁরই মতো দেখতে।” কিন্তু ওবামা যতই নিজের ভুল শোধরান, তাঁর মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই একরকম চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। একটি মার্কিন ওয়েবসাইটে ফলাও করে বেরিয়েও গিয়েছে এই খবর। ২০০৯-এর গোড়ায় ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট হয়ে হোয়াইট হাউসে আসেন, তখন তাঁর সঙ্গেই এসেছিলেন মারিয়ান রবিনসন। মিশেলের মা। সেই থেকে বাচ্চাদের দেখাশোনার গুরুদায়িত্ব তিনিই সামলে আসছেন। তিনিই ‘ফার্স্ট গ্র্যান্ডমাদার’। |
‘বো’ নামের যে পুষ্যিটিকে ঘিরে এত বিতর্ক, সে হল কুচকুচে কালো একটি ‘পর্তুগিজ ওয়াটার ডগ’। ওবামার দুই কন্যা সাশা ও মালিয়াকে কুকুরটি উপহার দিয়েছিলেন প্রয়াত সেনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ও তাঁর স্ত্রী। হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ওবামার সব চেয়ে প্রিয় সঙ্গী ‘বো’। এমনকী প্রেসিডেন্ট সপরিবার ছুটি কাটাতে গেলেও সে সঙ্গে যায়। হোয়াইট হাউসের লনে মারিয়ানের সঙ্গেও বেশ কয়েক বার দেখা গিয়েছে ‘বো’-কে।
তা হলে কী এমন হল যে, প্রিয় শাশুড়ির সম্পর্কে এমন একটি মন্তব্য করে বসলেন জামাই? নিন্দুকেরা বলছেন, এটা আসলে ‘ফ্রয়েডিয়ান স্লিপ’। মনোবিদ ফ্রয়েডের ভাষায়, মানুষ অনেক সময়ই মনে মনে এমন এক-একটি বিষয়কে পুষে রাখে যেগুলি প্রকাশ্যে এলে অনেক সময়ে বিতর্কেরও সৃষ্টি হতে পারে। ওবামার ক্ষেত্রেও কি তা হলে ঠিক তা-ই হয়েছে? সাদা বাড়ির অন্দরে জবাব খুঁজছে উৎসাহীমহল। |