তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল দলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যদিও অভিযুক্ত গোষ্ঠী তা স্বীকার করতে চায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২৬ অগস্ট পানাগড় বাজার হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচন। তাকে ঘিরেই এই অশান্তি। ভোটে এক দিকে প্রদেশ তৃণমূল সদস্য তথা কাঁকসা ব্লক প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি দেবদাস বক্সির গোষ্ঠী ৬টি আসনে প্রার্থী দেয়। আবার তৃণমূলের অপর গোষ্ঠী বর্তমান ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীও এই ৬টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়। অভিযোগ, দেবদাস বক্সির গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিতে বলে। কিন্তু অপর গোষ্ঠী তা না মানায় বুধবার তাদের দলীয় কার্যালয়ে দেবদাসবাবুর লোকজন হামলা চালায়। অভিযোগ, চেয়ার টেবিল উল্টে দেওয়া হয়, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়াল থেকে খুলে মেঝেয় ফেলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামালায়। তবে দেবদাসবাবু হামলার অভিযোগ স্বীকার করেন নি। তিনি বলেন, “আমাদের ছেলেরা ওদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিল। তখন পুলিশের সঙ্গে সামান্য ধস্তাধস্তি হয়।” অশোকবাবুও বলেন, “তেমন বড় কিছু নয়। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি ছিল। মিটে গিয়েছে।” |
কাঁকসার স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক তৃণমূল কর্মী বলেন, “নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই কাঁকসায় দুই গোষ্ঠীর লড়াই চলছে। পালাবদলের পরে তা আরও তীব্র হয়েছে।” তাঁরা জানান, অশোকবাবুর পক্ষে থাকা যুব তৃণমূল ব্লক সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই মূলত দেবদাসবাবুদের লড়াই। পানাগড় বাজার হাইস্কুলের এ দিনের নির্বাচনেও পল্লববাবুর বিরুদ্ধে সিপিএমের সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ তুলেছেন দেবদাসবাবু। তিনি বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাই প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় স্কুলের পরিচালন সমিতির দখল নিতে চাইছেন।” অন্যদিকে পল্লববাবু পাল্টা অভিযোগ, “দলীয় কার্যালয় যারা ভাঙচুর করে, দলনেত্রীর ছবি ফেলে দেয়, তারা আর যাই হোক তৃণমূল নয়। সিপিএমের সঙ্গে আঁতাত আছে তাদেরই।”
সিপিএমেরও অভিযোগ, তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর দাপটে তাদের প্রার্থীরা প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। দলের এক নেতা বলেন, “দেবদাস বক্সির গোষ্ঠীর লোকেরা আমাদের প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য করেছে।” দলের কাঁকসা জোনাল কমিটির সম্পাদক অলোক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূলের এক গোষ্ঠী এলাকায় রীতিমতো সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তাতে ওদের অন্য গোষ্ঠীর লোকজনই সিঁটিয়ে আছে। সেখানে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের অবস্থা তা বোঝাই যাচ্ছে।” |