লটারি বিক্রেতা নয়। সোমবার ভরদুপুরে রায়গঞ্জে এক ব্যবসায়ীকেই খুন করার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েই মারা যান মণিলাল বর্মন নামে এক লটারি বিক্রেতা।
রায়গঞ্জের বারো নম্বর বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিবাটী এলাকায় মণিলালবাবুকে খুনের তদন্তে পুলিশের এমনটাই জানতে পেরেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যবসায়ীর নাম যোগেন বর্মন। তাঁর কাছ থেকে তোলা আদায় করতে চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তিনি তা দিতে চাননি বলেই তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয়। রায়গঞ্জের ডিএসপি সালিমা লামা বলেন, “যোগেনবাবু মাটি সরবরাহের ব্যবসা করেন। তিনি তোলাবাজদের টাকা দিতে অস্বীকার করায় চার দুষ্কৃতী বাইকে করে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে ওই দিন গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পথচারী মণিলালবাবুর বুকে লাগে। ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। নিতাই বর্মন নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলেছে।”
যোগেনবাবু বলেন, “আমাকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। সমস্ত কিছুই পুলিশকে জানিয়েছি।” ওই দিন রাতেই রায়গঞ্জ থানায় যোগেনবাবু অভিযোগ করেছিলেন, চার যুবক তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তলের গুলির খোলও উদ্ধার হয়েছে।
মণিলালবাবুর পরিবারও খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। মণিলালবাবু সিপিএমের সদস্য ছিলেন। দলের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল বলেন, “মণিলালবাবুর পরিবারে স্ত্রী এবং পাঁচ ছেলেমেয়ে আছে। পরিবারটি যাতে সরকারি ক্ষতিপূরণ পায় তা দেখতে বলা হয়েছে জেলাশাসককে। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামব।” ক্ষতিপূরণের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলাশাসক পাশং নরবু ভুটিয়া জানিয়েছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ির অভিযোগ, “কাশিবাটী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দুষ্কৃতীরা ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে তোলা আদায় করছে। সাট্টা ও মদের আসরের দখল নিয়েও গোলমাল হচ্ছে। অবিলম্বে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে ব্যবসা বন্ধ ডাকা হবে।” বারো নম্বর বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা এলাকার কংগ্রেস নেতা তুষার রায় বলেন, “অবিলম্বে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে বাসিন্দাদের নিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” |