সিকিমে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ২০টি গাড়ি চালাতে পারে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা। চালানো হচ্ছে মাত্র ২টি। দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিস্থিতি। পর্যটকদের কথা ভেবে পুজোর মরসুম থেকেই এই রুটে বাস বাড়াতে উদ্যোগী এনবিএসটিসি। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান গৌতম দেব। তিনি বলেন, “সিকিম যাতায়াতের যে চুক্তি রয়েছে তাতে এনবিএসটিসি ২০টি গাড়ি চালাতে পারে। অথচ ২টি গাড়ি কেন চালানো হবে? তাই সিকিম যাতায়াতের ক্ষেত্রে আরও বেশি গাড়ি চালানো হবে। পাশাপাশি অসম এবং বিহার রুটেও হাতে গোনা দুই একটি গাড়ি চলে। তা বাড়ানো হবে।” এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, নতুন ৩০টি বাস পুজোর মরসুমে নামাতে তৎপর তাঁরা। নতুন বাস কেনার জন্য তাঁর দফতর থেকে দেড় কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পুরনো বাস বিক্রি করে কিছু টাকা পাওয়া গিয়েছে। তা ওই খাতে ব্যয় করা হবে। তা ছাড়া ১২টি গাড়ি কেনার টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য পরিবহন দফতর। পুজোর মরসুমেই বাসগুলি চালু করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কলকাতা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ওই নতুন বাস পরিষেবার উদ্বোধন করবেন বলে ঠিক হয়েছে। নতুন বড় বাস কিছু শিলিগুড়ি-কলকাতা রুটে চালানো হবে। কলকাতা, ডালখোলা, সিউড়ি, মালবাজারে সংস্থার বিভিন্ন অব্যবহৃত জমি রয়েছে। সেগুলির যথাযথ ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ দিন দফতরে এনবিএসটিসি’র শিলিগুড়ি ডিপোর কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে বেসরকারি বাস দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ‘পার্কিং ফি’ কত হবে তা এ দিন আলোচনা করে ঠিক করা হয়েছে। বেসরকারি বাস পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত চারটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ঠিক হয়েছে, ছোট বাস দিনে ৩০ টাকা হিসাবে এবং বড় বাস ৪০ টাকা হিসাবে পার্কিং ফি দেবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে তা লাগু করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই ছোট বাস ২০ টাকা এবং বড় বাস ২৫ টাকা পার্কিং ফি দিয়ে আসছিল। তবে দীর্ঘ সময় ধরে যাতে গাড়ি না রাখা হয় তা দেখতে বলা হয়েছে। বিনা লাইসেন্সে যে সব গাড়ি চালানো হচ্ছে বা অতিরিক্ত যাত্রী, পণ্য পরিবহণের বিষয়টি মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুজোর আগে কিছু কাজ করার চেষ্টা হচ্ছে। পুজোর পর বাকি কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। শৌচাগার, যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা সমস্তই সংস্কার করে উন্নত করা হবে। টার্মিনাস ভবনের একটি তলা বাড়িয়ে ব্যাঙ্কের মতো সংস্থাকে ভাড়া দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড় এবং ডুয়ার্সে ঘুরতে পুজোর সময় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গকে পর্যটক বান্ধব হিসাবে তুলে ধরতে এ দিন বিভিন্ন পর্যটন সংস্থাগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। পর্যটকদের সাহায্য করতে ‘হেল্প ডেস্ক’ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাগডোগরা বিমানবন্দর, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস, জংশন স্টেশন, নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন, মালবাজার এবং আলিপুরদুয়ারে ‘হেল্প ডেস্ক’ গড়ে তোলা হবে। পুজোয় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটে বাস বাড়ানো হবে। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস্ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল জানান, তাঁদের তরফে সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে। |