রঞ্জি ট্রফির প্রাথমিক দল নির্বাচনের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বাংলার নির্বাচক কমিটির অবস্থান ঘুরে গেল ১৮০ ডিগ্রি। ‘বিদ্রোহী’ পাঁচ ক্রিকেটারকে এ বছরই প্রয়োজনে রঞ্জি দলে খেলানো হবে বলে জানিয়ে দিলেন বাংলার নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান দীপ দাশগুপ্ত।
সৌরাশিস লাহিড়ি, অরিন্দম দাস, শিবশঙ্কর পাল, সঞ্জীব স্যান্যাল এবং রণদেব বসুকে রঞ্জির ৩২ জনের বাইরে রাখা নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছিল মঙ্গলবার। সৌরাশিস-সঞ্জীব সংবাদমাধ্যমের কাছে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বলে দেন, এই নির্বাচন তাঁরা মানেন না। এর পর পরই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ চালু হয়ে যায়।
নির্বাচক প্রধান দীপ আলাদা আলাদা করে কথা বলেন পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে। তাঁদের বোঝানো হয়, জুনিয়রদের আরও ভাল করে দেখে নেওয়ার জন্যই প্রাথমিক দলে তাঁদের বেশি করে রাখা হয়েছে। সিনিয়রদের ছাঁটাই করার জন্য নয়। বরং সৌরাশিস-সঞ্জীবদের বলা হয়েছে, এ বছরই বাংলার হয়ে খেলতে হতে পারে। জুনিয়ররা ভাল না করলে সিনিয়রদেরই ডাকা হবে। “ভবিষ্যতের বাংলা টিমে কারা থাকবে সেটা দেখে নেওয়ার জন্যই প্রাথমিক দলে বেশি করে রাখা হয়েছে। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে সৌরাশিস, রণদেবরা বাদ চলে গেল। রঞ্জি মরসুমের আগে স্থানীয় ক্রিকেট মরসুম শুরু হয়ে যাবে। সেখানে যদি সৌরাশিস আট উইকেট নেয়, বা অরিন্দম পর পর দু’টো সেঞ্চুরি করে, কে বাদ দেবে ওদের?” পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন বাংলার নির্বাচক প্রধান। কিন্তু প্রাথমিক দলেই কী সৌরাশিসদের ফেরানো হবে? এ বার দীপের বক্তব্য, “সেটা এখনই কিছু বলতে পারছি না। দেখা যাক, কী দাঁড়ায়।”
ঘটনা হল, সিএবি-র একটা প্রভাবশালী মহল থেকে বাদ পড়া পাঁচ ক্রিকেটারকে প্রাথমিক দলে ফেরানো নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপ দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, মরসুমের গোড়াতেই এ ধরণের বিতর্ক অনভিপ্রেত বলে মনে করছে সিএবি। নির্বাচকদের কেউ কেউ-ও বলছেন, প্রাথমিক দলই যে চূড়ান্ত কে বলল? অতীতে অনেক বার এমন হয়েছে যে, প্রাথমিক দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা রঞ্জি খেলেছেন। সিএবি-র সম্যস্যা আবার একটা নয়। সিনিয়রদের বাদ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু একই সঙ্গে জলঘোলা হচ্ছে বাংলা ‘এ’-র প্রাথমিক দল বাছা নিয়ে। এ বার থেকে অনূর্ধ্ব ২২ বাংলার আলাদা কোনও টিম খেলবে না। খেলবে বাংলা ‘এ’ নামে। যার প্রাথমিক দলে রাখা হয়েছে ষাট জন ক্রিকেটারকে। যার কোনও যুক্তি দেখছেন না অনেক কর্তা। সঙ্গে অভিযোগ, অনূর্ধ্ব-১৬ জনা কয়েক ক্রিকেটারকে প্রাথমিক দলে রাখা হয়েছে। অথচ তাদের আলাদা প্র্যাক্টিস করতে হবে অনূর্ধ্ব-১৬ টিমের সঙ্গে। আরও অভিযোগ ক্লাব ক্রিকেটে ভাল রান করেও বাংলা ‘এ’ দলে জায়গা হয়নি বেশ কিছু ক্রিকেটারের। যেমন প্রিনান দত্ত। মরসুমের হাজারের উপর রান। কিন্তু টিমে নেই। বা নাভেদ আমেদ। যা খবর, বাংলা ‘এ’ টিমের প্রাথমিক দল পাল্টানো হচ্ছে। সিএবি-র যুগ্ম-সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “কিছু নাম হয়তো ভুলবশত নির্বাচকদের মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে সব আমরা মিটিয়ে নিয়েছি।” |