পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠল কয়েক জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। দাঁইহাটের গণেশজননীতলার ঘটনা। সম্প্রতি কাটোয়ার মহকুমাশাসক দেবীপ্রসাদ করণমের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মহকুমাশাসক। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারা ওই পুকুর ভরাট করছিলেন, তা খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাসিন্দারা জানান, গণেশজননীতলার ওই পুকুরটি প্রায় শতাধিক বছরের পুরনো। ওই পুকুরের জল বাসিন্দারা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন। এছাড়া স্থানীয় মন্দিরেও বিভিন্ন প্রয়োজনে ওই জল ব্যবহার করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরেই ওই পুকুর ভরাট করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন এলাকার বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী। সম্প্রতি তাঁরা পাড়-সহ পুকুরের একাংশ কিনেছেন।
দাঁইহাট পুরসভার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গণেশজননীতলা, ধর্মরাজতলা, বৈরাগ্যতলা বাসিন্দারা মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, রাত্রে জেসিবি দিয়ে মাটি কেটে তা পুকুরে ফেলে ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাইরে থেকেও মাটি নিয়ে এসে এবং পুরনো বাড়ির ভগ্নস্তূপ ফেলে পুকুরটি ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। |
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, কাছাকাছি আর কোনও জলাশয় নেই। পুকুরটি ভরাট করে দেওয়া হলে আমরা জল ব্যবহার করতে পারব না। জলাশয়টি না থাকলে তাঁরা অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থেকেও বঞ্চিত হবেন। মহকুমাশাসককে দেওয়া চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে পুরসভা, বিএলএলআরও এবং কাটোয়া থানায়। তাঁদের ধারণা, পুকুরটি ভরাট করে তা বাস্তুজমি হিসেবেই চড়া দামে বিক্রি করা হবে। তাই ওই পুকুর ভরাট বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এ দিকে, জলাশয় ভরাটের খবর পেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেই তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান জেলা মৎস দফতর। ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কথাও বলেছেন তদন্তকারী দলটি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, তদন্ত শেষে যদি দেখা যায় পুকুর ভরাট করা হচ্ছে, তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই ব্যবসায়ীদের নাম তিনি জানাতে চাননি।
তবে দাঁইহাটের পুরপ্রধান কংগ্রেসের সন্তোষ দাসের দাবি, “পুকুর ভরাট হচ্ছে না বলেই জানি। পুকুর পাড় সমান করার কাজ হচ্ছিল।”
মহকুমাশাসক জানান, পুলিশ গিয়ে ইতিমধ্যেই ওই পুকুরে মাটি ফেলার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। |