দেশের মধ্যে এই প্রথম বার প্রবাল অরণ্য প্রতিস্থাপনের কাজ সফলভাবে সারা হল। লক্ষদ্বীপের আগাত্তি থেকে ‘অ্যাক্রোপোরা’ প্রবাল দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে গুজরাতের মিঠাপুরের সমুদ্র ও কচ্ছের রানে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক দশকের ব্যবধানে ফের, সম্প্রতি কচ্ছ এবং মিঠাপুরের জলের তলায় বসতি বিস্তার শুরু করল ‘অ্যাক্রোপোরা’।
গুজারাতের প্রধান মুখ্য বনপাল প্রদীপ খন্না জানান, গুজরাতে ‘অ্যাক্রোপোরা’র উপস্থিতি ক্রমেই কমে আসছে। কয়েক দশকের মধ্যে জীবিত ‘অ্যাক্রোপোরা’র দেখা মেলেনি এখানে। তাই প্রবাল অরণ্য ফিরিয়া আনতে ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউটিআই), গুজরাত ও লক্ষদ্বীপ বন বিভাগ এবং টাটা কেমিক্যাল্স লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে প্রবাল প্রতিস্থাপনের উদ্যোগটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। জলজগতের বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখতে এবং সমুদ্রতলের প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতকে রঙিন করে তুলতে প্রবালের উপস্থিতি অপরির্হায। |
এই সেই প্রতিস্থাপিত প্রবাল অরণ্য। —নিজস্ব চিত্র |
মুখ্য বনপাল সতীশ কে গোয়েল বলেন, “মূলত মানুষের হাতেই প্রবাল ধ্বংস হচ্ছে। এখনই সতর্ক না হলে, প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলব আমরা। জলের প্রকৃতিতে বড় পরিবর্তন হলে প্রবালেরও
মৃত্যু হয়।”
ভারতের চারটি এলাকায় এই ধরনের প্রবাল অরণ্য রয়েছে। সেগুলি হল, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লক্ষদ্বীপ, তামিলনাড়ুর মান্নার উপসাগর ও গুজরাতের কচ্ছ উপসাগর। কচ্ছের ‘ মেরিন ন্যাশনাল পার্ক’-এ ৪৯টি প্রজাতির প্রবাল রয়েছে। মেরিন পার্কের মুখ্য সংরক্ষক আর ডি কম্বোজ বলেন, “চল্লিশ বছর আগে ‘অ্যাক্রোপোরা’ মিলত কচ্ছে। লক্ষদ্বীপ থেকে প্রবাল এনে জীবন্ত অবস্থায় গুজরাতে প্রতিস্থাপিত করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। এমন জিনিস আগে চেষ্টাই করা হয়নি। দুটি জায়গায় জলের প্রকার, কম্পনমাত্রা, তাপমাত্রা, আলো, অক্সিজেন মাত্রার বিস্তর ফারাক হয়। ফের ‘অ্যাক্রোপোরা’ বসতি বসাবার পরে তাদের বংশবিস্তারের দিকে আমরা বিশেষ নজর রাখছি।” ডব্লিউটিআই-এর ফিল্ড অফিসার গৌতম এস বলেন, “মোট ২২টি প্রবালের টুকরো আনা হয়েছিল। তার মধ্যে ৮০ শতাংশ বেঁচে গিয়েছে। তাদের স্বাস্থ্যও ভাল রয়েছে।” |