চেন্নাইয়ে প্রয়াত বিলাসরাও দেশমুখ
বস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। মারা গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিলাসরাও দাগাদোজিরাও দেশমুখ। আজ বিকেলে তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে চেন্নাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতাল।
বেশ কিছু দিন ধরেই লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন দেশমুখ। দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের পরামর্শও নিয়েছিলেন। অগস্ট মাসের প্রথম দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৬ অগস্ট চেন্নাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তার পর থেকে সেখানেই ছিলেন দেশমুখ। তাঁর চিকিৎসার জন্য কয়েক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছিল।
৬৭ বছরের দেশমুখের দেহে লিভার প্রতিস্থাপনের কথা ভেবেছিলেন চিকিৎসকরা। বিভিন্ন সূত্রে লিভারের খোঁজ শুরু হয়েছিল। প্রয়োজনে দেশমুখের জন্য গুজরাত থেকে লিভার পাঠাতেও উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গ্লোবাল হাসপাতালে অন্য এক রোগীর দেহ থেকে গত কাল রাতে লিভার সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, অস্ত্রোপচারের আগেই সেই রোগী মারা যান।
আগামী কাল মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলায় দেশমুখের গ্রাম বাভলগাঁওয়ে তাঁর শেষকৃত্য হবে। এই গ্রাম থেকেই শুরু হয়েছিল দেশমুখের রাজনৈতিক যাত্রা। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত বাভলগাঁওয়ের সরপঞ্চ ছিলেন তিনি। ক্রমে ওসমানাবাদ জেলা পরিষদ ও লাটুর তালুকা পঞ্চায়েত সমিতির ডেপুটি চেয়ারম্যান হন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত ওসমানাবাদ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে বিশেষ ভাবে সক্রিয় ছিলেন।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতির নাড়ি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ছিল দেশমুখের। ১৯৮০ সালে প্রথম বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজ্য মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র, রাজস্ব, শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৯৫ সালের বিধানসভা ভোটে হেরে গিয়ে বড় ধাক্কা খান দেশমুখ। কিন্তু, ১৯৯৯ সালে ফের ৯০ হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে সুশীলকুমার শিন্দের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে হয় তাঁকে। হাল ছেড়ে দেওয়া ধাতে ছিল না দেশমুখের। ২০০৪ সালে ফের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি।
মুম্বই হামলার সময়ে রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন দেশমুখই। হামলার পরে ছেলে রীতেশ দেশমুখ ও চিত্রপরিচালক রামগোপাল বর্মাকে নিয়ে তাজ হোটেলে যান তিনি। যাতে শুরু হয় বিতর্ক। গোটা মুম্বই যখন জ্বলছে তখন দেশমুখ কেন নিজের ছেলে ও এক চিত্রপরিচালককে তাজ হোটেলে গিয়েছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কোনও কোনও শিবির অভিযোগ করে, তিনি ‘সন্ত্রাস-পর্যটনে’ বেরিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত মুম্বই হামলা নিয়ে বিতর্কের জেরে তাঁকে ইস্তফা দিতে হয়।
রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁকে ভারী শিল্প ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১২ সালের জুলাই মাসে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞানমন্ত্রী হন তিনি। তাজ হোটেল কাণ্ড ছাড়াও বহু বিতর্কে জড়িয়েছেন দেশমুখ। চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে সুভাষ ঘাইকে জমি দিয়েছিলেন তিনি। সেই জমি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় বম্বে হাইকোর্ট। এই ক্ষেত্রে দেশমুখ তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদের ‘অপব্যবহার’ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছিল হাইকোর্ট। কখনও দলীয় বিধায়ককে ফৌজদারি মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছে আদালত। আবার কখনও নিজের পারিবারিক ট্রাস্টকে জমি দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল। আদর্শ আবাসন কেলেঙ্কারিতে তাঁর ভূমিকা নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। তবে এর পরেও দেশমুখের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল না কারওই। তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতাকে আজ সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। আজ দেশমুখের সম্মানে সারা দেশের সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.