ইতিহাস বলে বর্ণবিদ্বেষের জেরে রেষারেষি বা হানাহানির ইতিবৃত্ত বেশ পুরনো। কিন্তু যদি হঠাৎ জানা যায় শ্বেতাঙ্গ বা কৃষ্ণাঙ্গ নির্বিশেষে সকলেরই পূর্বসূরি এক জনই, তা হলে?
শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও তেমনটাই সম্প্রতি দাবি করেছে ব্রিটেনের এক দল গবেষক। তাঁদের দাবি, ‘আদিমাতা’ ইভের ‘নাতির’ সন্ধান মিলেছে স্কটল্যান্ডে। জাতে ব্রিটিশ হলেও তাঁর জিনে কিন্তু রয়ে গিয়েছে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গী ইভের ছাপ। তাই আপামর ব্রিটিশদের এই ‘দাদু’টিকে সামনে রেখেই ওই গবেষকদের বক্তব্য, কালো বা সাদা-সব চামড়ারাই শুরু একই জায়গায়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, স্কটল্যান্ডের সেই বৃদ্ধের নাম, ইয়ান কিন্নাইরড। বয়স ৭২। স্কটল্যান্ডের একটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তিনি। নিজের পূর্বপুরুষদের পরিচয় জানতে দিন কয়েক আগে ডিএনএ পরীক্ষা করেন তিনি। আর তখনই ধরা পরে, মায়ের সূত্রে এমন এক জিন রয়েছে তাঁর শরীরে, যা শুধু আদি আফ্রিকানদের মধ্যেই দেখা যেত। বৈজ্ঞানিক ভাষায় এর নাম ‘থোরোব্রেড’। সঙ্গে সঙ্গে গবেষকরা ফোন করেন ইয়ানকে। জানান, তাঁর কোষের মাইটোকনড্রিয়ায় যে ডিএনএ-র সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেটি প্রায় তিরিশ
হাজার বছরের পুরনো। শুধু তা-ই নয়, তাঁর শরীরে সেই জিনের খুব একটা হেরফেরও (মিউটেশন) হয়নি। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, ইভের ‘বিশুদ্ধ’ উত্তরাধিকারী ইয়ানই। গবেষক দলের প্রধান অ্যালিস্টেয়ার মফত জানালেন, “ইয়ানের ঘটনা প্রমাণ করল শ্বেতাঙ্গ অ্যাংলো স্যাক্সনরাও আসলে কৃষ্ণাঙ্গ ইভেরই বংশধর।” তাঁর দাবি, একই জিন রয়েছে ইয়ানের বোন পঁয়ষট্টি বছরের জিয়ানের মধ্যেও।
নিজের পূর্বপরিচয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ইয়ান। কে বলতে পারে, হয়তো খবরটা শুনলে খুশি হয়ে উঠতে পারেন এক কৃষ্ণাঙ্গও। যিনি আজীবন লড়ে গিয়েছেন বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে সেই নেলসন ম্যান্ডেলা আজকের পর থেকে জানবেন, বর্ণবৈষম্য ছিল শুধুই ভাবনার ভ্রম। |