তিস্তা এবং স্থল-সীমান্ত চুক্তি নিয়ে দিল্লির ‘টালবাহানায়’ উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মহম্মদ এরশাদ। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূত হিসাবে কাল রাত থেকে দফায় দফায় ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করছেন এরশাদ। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাইয়ের পর আজ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করবেন। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং বহুদলীয় ব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের চলতি কূটনৈতিক বিনিময়েরই অঙ্গ এরশাদের এই সফর।” |
নয়াদিল্লিতে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং হুসেইন মহম্মদ এরশাদ। ছবি: পি টি আই। |
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক উদ্বেগের বিষয়গুলি নিয়ে শেখ হাসিনার জোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির নেতা এরশাদ বিশদে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে সরকার যে আশাবাদী, সে কথা এরশাদকে জানিয়েছেন মনমোহন। দু’দেশের মধ্যে স্থল-সীমান্ত চুক্তি রূপায়ণের জন্য সংবিধান সংশোধন এবং তার জন্য সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, সে কথাও এরশাদকে বুঝিয়ে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, এরশাদকে যথেষ্ট রাজনৈতিক গুরুত্ব দিচ্ছে দিল্লি। নিরাপত্তা এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন পরে ঢাকার পক্ষ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট ভারত-বিরোধী জঙ্গিদের মোকাবিলার প্রশ্নে এই সহযোগিতা দিল্লির কাছে অত্যন্ত জরুরি। হাসিনার সঙ্গে এরশাদের সাম্প্রতিক মতবিরোধের কথা নয়াদিল্লির অজানা নয়। তাই বাংলাদেশে সুস্থিতির স্বার্থে এরশাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁর ক্ষোভ প্রশমিত রাখাটাও নয়াদিল্লির পক্ষে মঙ্গলের হবে। আজকের বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও দু’দেশের মধ্যে কথা হয়েছে। ইসলামি কট্টরপন্থা যাতে বাংলাদেশে মাথা চাড়া দিতে না পারে, বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে সে জন্য উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছেন মনমোহন। |