ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিরহস্যে অণু-পরমাণুদের কাণ্ডকারখানায় পদার্থবিজ্ঞানীরা যে নতুন কণাটির রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করে সারা বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছেন, তার নামকরণ করেছেন ‘ঈশ্বর কণা’। অর্থাৎ ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির রহস্যজগতে ঈশ্বরকে যুক্ত করলেন বেশিটাই অনিচ্ছাসত্ত্বেও। এ-ও হতে পারে জীব-জগতের কৌতূহল বাড়াবার জন্য। গবেষণাধর্মী পদার্থবিজ্ঞানী নই, তবে আধ্যাত্মিক বা মিস্টিক জগতের কিছু সংবাদ জানি যুগযুগ ধরে ভারতীয় মুনি-ঋষিদের উপলব্ধিজাত বেদবেদান্তাদি কিছু শাস্ত্রীয় বাক্যের মধ্যে। সেখানেও কিন্তু ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির রহস্যকথা আছে, যেখানে ‘অণরোনীয়ান মহতোমহীয়ান’ (উপনিষৎ) এক সত্তার অস্তিত্ত্বের কথা আছে যা বা যিনি মানুষের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য চেতনার বাইরে এক নৈর্ব্যক্তিক সত্তা, যিনি পরব্রহ্ম নামে কথিত। তিনি ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেও ব্রহ্মাণ্ডের সীমানার বাইরে থাকেন। |
ঈশ্বর-সন্ধানী? পিটার হিগস (বাঁ দিকে) এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসু। |
মুনি-ঋষিদের উপলব্ধিতে তিনি এমন এক সত্তা, যা ‘অবাঙ্মনসোগোচরম্’ (উপনিষৎ) অর্থাৎ এক দিকে তিনি যেমন দৃশ্যমান নন এবং বাক্যমনাতীত, তবু তিনি আছেন এমন এক সত্তা বা অস্তিত্ত্বরূপ হয়ে, যা ‘অণরোনীয়ান মহতোমহীয়ান’ অর্থাৎ ক্ষুদ্রাতীত ক্ষুদ্র এবং বৃহত্তম যে কোনও বস্তু থেকেও বৃহৎ। তাঁকেই তাঁরা ‘পরব্রহ্ম’ বা ‘ঈশ্বর’ আখ্যা দিয়ে খোঁজার চেষ্টা করেনবাইরে কোথাও নয়, নিজেদেরই অন্তর্জগতের উপলব্ধিতে এবং আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে যান। শাস্ত্রে সেই অবস্থাকে ‘সমাধি’ বলা হয়েছে, যা তাঁদের উপলব্ধিতে শ্রীরামকৃষ্ণের কথায় ‘বোধে বোধ’ (কথামৃত)। সদ্চিদানন্দ সত্তা অর্থাৎ তিনি এমন এক অস্তিত্ত্ব যিনি ক্ষয়রহিত অর্থাৎ তাঁর মৃত্যু নেই এবং জ্ঞান বা চৈতন্য ও আনন্দস্বরূপ। শাস্ত্রে আরও বলা হয়েছে, আমাদের দৃশ্যমান জীবজগৎ সেই অমৃতস্বরূপ আনন্দঘন সত্তার এক কণা আনন্দ পেয়েই আনন্দে পরিপূর্ণ। অর্থাৎ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ও ইন্দ্রিয়াতীত সব আনন্দই এই স্রষ্টার ছায়া বা মায়া।
শাস্ত্রে তাই ব্রহ্মাণ্ডের স্রষ্টাকে এক অচিন্ত্য শক্তি বা সত্তা বলা হয়। যেহেতু তিনি ক্ষয়রহিত তাই সৎবস্তু, অর্থাৎ অমৃত ‘ন অস্য প্রিয়ং প্রমায়ুকং ভবতি’ (উপনিষৎ)। মুনি-ঋষিদের তাত্ত্বিক দৃষ্টির সঙ্গে বিজ্ঞানীদের ঈশ্বরকণার যদি সঠিক ভাবে মেলবন্ধন ঘটানো যায়, তা তবু ঈশ্বর কণা হবে না। তা হবে এক অমৃতকণা তথা আনন্দকণাবিজ্ঞানীদের ঈশ্বরকণা যার ছায়ামাত্র বা শাস্ত্রমতে সেই পরব্রহ্মের মায়া ছাড়া কিছুই নয়। তবে এই সম্ভাবনা হয়তো এখনও দূর অস্ত্।
বিজ্ঞানীদের গবেষণাগারে এবং যা মিস্টিক বলে কথিত। আইনস্টাইন প্রমুখ বিজ্ঞানীরও হয়তো স্বপ্নদর্শন ছিল। বিজ্ঞানী হিগ্সযাঁর আবিষ্কার ‘ঈশ্বরকণা’ নিয়ে এত হইচই, তাঁরও মানসলোকে বা অবচেতন মনে এই ভাবনা ছিল কি না বা এখনও আছে কি না, তা আমাদের জানা নেই।
স্বামী দেবেন্দ্রানন্দ। নরেন্দ্রপুর, কলকাতা-১০৩
|
মানিকতলার বিবেকানন্দ রোডস্থ চৌমাথা ও আশপাশে পথচারীদের জন্য সুলভ কমপ্লেক্স বা পরিচ্ছন্ন শৌচাগার ও স্নানাগার চাই। সর্বস্তরের যান ও অটো রিকশার পথচারী এখানে ওঠানামা করেন। বিডন স্ট্রিটের কাছ মানিকতলা বাজারের সামনে ভ্যাটের পাশে সাধারণ শৌচাগারটি নোংরা ও ছোট। ব্যবহারের অযোগ্য।
ডালিমকুমার দত্ত। কলকাতা-৬ |