প্রাক্তন বাংলাদেশী প্রেসিডেন্ট হুসেন মহম্মদ এরশাদের সঙ্গে আলোচনায় বসল ভারতীয় নেতৃত্ব। আজ দু’দিনের সফরে নয়াদিল্লি এসেছেন এরশাদ। আজ তাঁর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করলেন বিদেশ সচিব রঞ্জন মাথাই। আগামী কাল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
বাংলাদেশের জনতা পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ, হাসিনা সরকারের মহাজোটের অন্তর্গত ঠিকই, কিন্তু যত দিন যাচ্ছে হাসিনার সঙ্গে সংঘাত বাড়ছে এরশাদের। সম্প্রতি রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি ‘মাইনাস টু’ সূত্র ঘোষণা করেছেন। সেই সূত্রটি হল, দুই প্রমীলা নেতা বাংলাদেশকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছেন। ফলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এঁদের দু’জনকে বাদ দিয়েই চলতে হবে। |
বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, বাংলাদেশ তথা যে কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্র সম্পর্কে ভারতের নীতি খুবই স্পষ্ট। সেটি হল, যখন যে দল ক্ষমতার শীর্ষে থাকবে তার সঙ্গেই ‘কাজ’ করতে প্রস্তুত ভারত। অন্য দেশের কে বা কারা ক্ষমতাসীন হবে সে ব্যাপারে নাক গলাতে চায় না নয়াদিল্লি। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন পরে যথেষ্ট ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছে মনমোহন সরকার। হাসিনা সরকারকে বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্পে সাহায্য করার জন্য খুব কম সুদে আর্থিক ঋণও দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিমুখ কোনও কারণে ব্যাহত হোক এমনটা চাইছেন না প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। সে কারণেই এরশাদের সঙ্গে বৈঠককে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ভারত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভোট পর্যন্ত যাতে স্থিতিশীল থাকে সে ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এরশাদকে অনুরোধ করা হচ্ছে। সাউথ ব্লকের মতে, তাঁর দল ছোট হলেও, এরশাদের কট্টরপন্থী ভোটব্যাঙ্ক হাসিনার সঙ্গেই থাকলে সেটা ভারতের পক্ষে অপেক্ষাকৃতভাবে সুবিধাজনক। এবং পাকিস্তান, জামাত এবং বিএনপি জোটকে কূটনৈতিক ভাবে কিছুটা প্রশমিত করে রাখার জন্য এরশাদের মতো নেতার সঙ্গে সহযোগিতার পথে হাঁটা জরুরি। তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার ব্যাপারে ভারত যে আন্তরিক সে কথাও জানানো হয়েছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে। তবে এ ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ ঐকমত্য তৈরির জন্য কিছুটা সময় লাগবে বলে আজ এরশাদকে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ সচিব। |