শুধু মেয়েদের জন্যেই শিল্প-শহর সৌদি আরবে
স্ত একটা শহর। তা-ও আবার শুধুই মেয়েদের জন্য। যেখানে থাকবে না পুরুষের ‘শাসন’। বাড়ির বাইরে পা ফেলবে মেয়েরা, পিছনে থাকবে না পুরুষের ছায়া। সমাজের ‘রক্ষণশীল’ নিয়ম আর পুরুষের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে সৌদি মেয়েদের জন্য এমনই এক শহর তৈরি করতে চলেছেন সৌদি আরবের শিল্প-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষ।
তবে একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, এ-ও কী এক রকম ‘পর্দাপ্রথা’? পুরুষের চোখ এড়িয়ে পর্দার আড়ালে মেয়েদের শহর। যেখানে মেয়েরা কাজ করুক, বাড়ির বাইরে বেরোক, তবে পুরুষের মুখোমুখি হতে হবে না তাকে।
শিল্প-শহরের নির্মাণ কাজ শুরু হবে সামনের বছর। বিনিয়োগ করা হবে প্রায় ৫০০ কোটি রিয়াল। কিন্তু যেখানে বাড়ির বাইরে এক পা ফেলতে অনুমতি লাগে পুরুষের, সেখানে একটা গোটা শহর দাপিয়ে বেড়াবে মেয়েরা!
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর গত বছরই ভোটদানের অধিকার মিলেছে মেয়েদের। পুর-ভোটের দু’দিন আগে মেয়েদের ভোটাধিকার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজা আবদুল্লা। সৌদি আরবে শুধুমাত্র পুর-নির্বাচনই হয়। তাই অধিকার মিললেও ভোট দেওয়া হয়নি সে বার। অপেক্ষা করতে হবে আরও তিন বছর। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই যে তাঁদের জন্য এমন চমক অপেক্ষা করছে, এ কথা বোধহয় ভাবতেও পারেনি সৌদি মেয়েরা।
দেশের শরিয়ত আইনে মেয়েদের কাজ করায় কোনও আপত্তি নেই। তবে বাড়ির ছেলেদের অনুমতি না মিললে তো চাকরি করার উপায় নেই। ফলস্বরূপ, চাকুরিক্ষেত্রে রয়েছেন মাত্র ১৫ শতাংশ মহিলা। সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই কর্মক্ষেত্রে মেয়েরা আরও বড় ভূমিকা নিক। তবে এ কথাও এক রকম স্পষ্ট, তারা চায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলুক মেয়েরা, তবে পুরুষের সঙ্গে নয়। আলাদা। নিজেদের শহরের ‘অন্দর মহলে’।
এ দিন শিল্প-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সালেহ-আল-রশিদ বলেন, “আমি নিশ্চিত, মেয়েরা প্রমাণ করে দেবে নিজেদের দক্ষতা, দেখিয়ে দেবে তারা কী পারে।” একটা নয়, মেয়েদের জন্য এমন আরও অনেক শহর তৈরি করতে চান রশিদ, যেখানে মেয়েরাই হবেন অফিসের ‘বড়বাবু’, ছোট-বড় সব কাজই সামলাবেন তাঁরা। রশিদের বক্তব্য, “মেয়েদের মালিকানায় সৌদি আরবে বেশ কিছু সংস্থা আছে। তাতে বহু মহিলা কাজও করেন। কিন্তু আমরা চাই দেশে একাধিক মহিলা পরিচালিত শিল্প-সংস্থা গড়ে উঠুক।”
গোটা পৃথিবীতে সৌদি আরব এমন একটা দেশ যেখানে মেয়েদের গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই। গত বছর মানাল আল শরিফ নামে বছর তিরিশের এক মহিলা গাড়ি চালিয়ে সে ছবি ট্যুইটারে পোস্ট করেন। এর পর যা হয়েছিল তা সবারই জানা। ‘শাস্তিস্বরূপ’ বেশ কিছুটা সময় সংশোধনাগারে কাটাতে হয় মানালকে।
দূরে থাক গত বছরের উদাহরণ। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চাপে পড়ে এ বছরই অলিম্পিকে প্রথম কোনও মহিলাকে দেখা গেল সৌদি-টিমে। জুডো খেলোয়াড় ওজদান শাহেরকানিকে আটকানোর জন্য কম চেষ্টা করেনি দেশের শরিয়ত আইন। কতটা কাপড়ে মাথা ঢেকে সে ময়দানে নামবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।
তবে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। সৌদি-সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাঠে নামেন ওজদান। পুয়ের্তো রিকোর প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে অবশ্য এক মিনিটের বেশি দাঁড়াতে পারেননি তিনি। তবে ওই এক মিনিটে দেশের মেয়েদের যে ‘বাঁধভাঙা’ স্বপ্ন দেখিয়েছেন ওজদান, একটা ছোট্ট শিল্প-শহরের ‘পর্দা’ সেই স্বপ্নকে ধরে রাখতে পারবে কি?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.