রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘বাধা’, কালনায় অভিযোগ সিপিএমের
তৃণমূল ও পুলিশ প্রশাসন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা দিচ্ছে- এমনই অভিযোগ তুলে নিরপেক্ষ প্রশাসনের দাবিতে রবিবার কালনা থানায় একটি স্মারকলিপি দিল সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটি।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্মারকলিপিতে কবে কোথায় কীভাবে তৃণমূল তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হেনস্থা করেছে তা যেমন জানানো হয়েছে, পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তোলা হয়েছে। যদিও তৃণমূল ও পুলিশ-প্রশাসন সে সব অভিযোগ মানতে নারাজ।
স্মারকলিপিতে সিপিএম অভিযোগ করে, ২০১১ সালের ১১ জুন কালনা ২ নম্বর ব্লকের বাদলা অঞ্চলের কুলটি বাজারে দলীয় কর্মী অনন্ত সোরেনের সাইকেল মেরামতির দোকানে হামলা চালায় তৃণমূল। অনন্তের স্ত্রী শুকমনি সোরেনের শ্লীলতাহানি করা হয়। সিপিএমের দাবি, বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। পাশাপাশি তাদের অভিযোগ, ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপলতি গ্রামের বাসিন্দা, সিপিএম সমর্থক এক শিক্ষকের বাড়িতে বিনা ওয়ারেন্টে পুলিশ হামলা করে। ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল অকালপৌষ পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে ঢুকে হামলা চালায় তৃণমূল। দলীয় প্রধানকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। প্রধানকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে দাবি সিপিএমের। কালনা ২ ব্লকের তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, “অকালপৌষ পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে ১০০ দিনের প্রকল্প, বার্ধক্য ভাতা-সহ নানা বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানাচ্ছিল। সম্প্রতি প্রধানের সঙ্গে কিছু মানুষের নানা দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিবাদ হয়। কিন্তু প্রধানকে মারধরের ঘটনাটি ঠিক নয়।” মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “কাউকে মিথ্যা অভিযোগে হেনস্থা করার মতো ঘটনা সম্প্রতি ঘটেনি।”
পাশাপাশি সিপিএমের তরফে অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই তৃণমূল ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে সিপিএমের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও স্থানীয় স্কুল ও সমবায় নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। তাদের দাবি, খাঁপুর গ্রামে তৃণমূলের মহিলা কনভেনশন রয়েছে বলে ২০১২ সালের ১০ জুন নান্দাই পঞ্চায়েতের খড়িনাল গ্রামে কৃষকসভার অঞ্চল সম্মেলনের অনুমতি মেলেনি। ১৪ জুলাই বেগপুর গ্রামে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মিছিল করা বা দুর্ঘটনায় মৃত সিপিএম নেতা বিমল সিংহরায়ের স্মরণসভা করার অনুমতি পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ। সিপিএমের দাবি, ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের জনসমাবেশ বা বর্ধমান শহরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার ‘অজুহাতে’ই প্রশাসন ওই অনুমতি দেয়নি। কালনা থানা সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, এই বিবেচনা করেই মিছিল বা সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পাশাপাশি, সিমলন অন্নপূর্ণা-কালী মন্দিরে ১ অগস্ট ভোটার তালিকা তুলতে বাধা দেওয়া বা ৩ অগস্ট আটঘোরিয়া সূর্যপুর কৃষি সমবায় সমিতির মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ করে সিপিএম। বেগপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি বা ঘনশ্যামপুর সমবায় সমিতিরর নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া হয় বলেও দাবি তাদের। কালনা জোনাল কমিটির সম্পাদক করুণা ভট্টাচার্যের কথায়, “তৃণমূল ও পুলিশ একত্রে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছে। বহু জায়গাতেই নির্বাচনের নামে প্রহসন চলছে। প্রতিবাদ করলেই আক্রমণ করা হচ্ছে বা মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দলীয় নেতা কর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করছি, এলাকার বহু জায়গাতেই রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের উপযুক্ত পরিবেশ নেই।” যদিও অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়ে কালনা ১ সমবায় সমিতির নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা রাজকুমার পাণ্ডে পাল্টা দাবি করেন, “সমবায় সমিতির নির্বাচনে বেশিরভাগ জায়গাতেই সিপিএম প্রার্থী জোগাড় করতে পারছে না।” তাঁর কথায়, “মানুষের মন থেকে যত বেশি সিপিএম মুছে যাচ্ছে, তত হতাশ হয়ে যাচ্ছে তারা।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের বক্তব্য,“কোনও জায়গাতেই সন্ত্রাসের কোনও অভিযোগ নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.