মাত্র দশ মাস বয়সে মায়ের মৃত্যু। তারপরেই অন্যত্র বিয়ে করে বাবার চলে যাওয়া। সব মিলিয়ে একাকীত্ব ঘিরে রেখেছিল পূজা সাউকে। তদন্তকারীদের দাবি, বিগত বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল পূজা। আর সেই অবসাদ থেকেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, জলে ডুবেই মৃত্যু হয় পূজার।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পড়তে বেরিয়ে বাড়ি ফেরেনি বনহুগলি রামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যামন্দিরের দ্বাদশ শ্রেণির এই ছাত্রী। পরের দিন সকালে বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ডাক্তার বাগান এলাকার একটি পুকুর থেকে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। খুন না আত্মহত্যা, তা নিয়েই প্রথমে শুরু হয় তদন্ত। পরে অবশ্য জানা যায় মানসিক অবসাদের কথা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মা মারা যাওয়ার পর থেকেই পিসির কাছে থাকত পূজা। তার পিসির এক ছেলে এবং মেয়ে রয়েছে। পিসি এবং পিসেমশাইকেই মা-বাবা বলে ডাকত সে। পূজার আসল মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই বাবা অন্যত্র বিয়ে করে ট্যাংরায় আলাদা থাকেন। ঘটনার পরে পূজার গৃহ শিক্ষক ও বান্ধবীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। আর তাতেই উঠে আসে পারিবারিক সমস্যা ও একাকীত্বের কথা।
শনিবার পূজার দুই গৃহ শিক্ষক সঞ্জীব সেন ও সুশীল ভঞ্জ জানান, চুপচাপ থাকত পূজা। ওকে দেখে মনে হত, সব সময়ই যেন কিছু একটা চিন্তা করছে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, গত পনেরো দিন ধরে যেন একটু বেশিই অন্যমনস্ক দেখাচ্ছিল পূজাকে। সুশীলবাবু বলেন, “নিখোঁজ হওয়ার পরে খোঁজখবর করে জানতে পেরেছি, ওর মা বকাবকি করেছিলেন।” সঞ্জীববাবু জানান, মাঝেমধ্যেই অনুপস্থিত থাকত পূজা। সে জানিয়েছিল, ব্যক্তিগত সমস্যা রয়েছে। বান্ধবীদের কাছেও নাকি পারিবারিক অশান্তির কথা বলে ভীষণ কান্নাকাটি করত সে। যদিও পরিবারে তেমন কোনও অশান্তি আদৌ ছিল না বলে দাবি করেছেন পূজার পিসেমশাই জাকির হোসেন। |