বিরোধী নেত্রী হিসেবে প্রায়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যেত, ‘সব পুলিশ খারাপ নয়।’ ক্ষমতাচ্যুতির পরে বিরোধী আসনে বসে সেই মমতার সুরেই পুলিশের ‘পাশে’ দাঁড়াতে চাইছে সিপিএম। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী মমতার হাতেই এখন পুলিশ দফতর। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র শনিবার কোচবিহারে ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলনে বলেন, “পুলিশকে অযথা দোষারোপ করা উচিত নয়, তাঁদের অবস্থাটা বুঝতে হবে।” সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যবাবু জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাসক গোষ্ঠীর হয়ে পুলিশ কর্মীদের একাংশকে ‘পক্ষপাতিত্ব’ করতে কার্যত বাধ্য করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “অনেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব বা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করছেন। কিন্তু রাজ্যে পুলিশের যা অবস্থা তাতে কথায়-কথায় ওদের দুষলে চলবে না। পুলিশকে কাজ করতে না-দেওয়া বা পক্ষপাতিত্ব করতে বাধ্য করাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল।”
ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের নেত্রী মমতাকে আক্রমণ করতেই কলকাতার পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের উল্লেখ করে সূর্যবুর কটাক্ষ, “পার্ক স্ট্রিটের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কিচ্ছু হয়নি। এক মহিলা অফিসার গর্ব করার মত কাজ করলেন। অপরাধীদের ধরলেন। অথচ তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। আইপিএস অফিসার ভাল কাজ করলে যদি এমন শাস্তি হয়, তা হলে থানার সাধারণ অফিসারদের কী হবে?” মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর আইন ভাঙার ঘটনাও টেনে সূর্যবাবুর অভিযোগ, “আইন ভেঙে পুলিশ অফিসারকে মারতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো, অথচ তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ফোন এল। পুলিশকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। যেখানে পুলিশই আক্রান্ত, কাজ করতে পারছে না, সেখানে তাঁদের দূষে কী হবে!” সম্মেলনের মঞ্চ থেকে, কংগ্রেসের ‘মন জয়’ করার চেষ্টারও কসুর করেননি বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, “প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারাই দাবি করছেন, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূলের হাতে ওঁদের সাত কর্মী খুন হয়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের এক মন্ত্রী দায়িত্ব ছেড়েছেন। এরপরেও বলব রাজ্যে আইনের শাসন আছে!” |