২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে সরকারে যোগ দেবেন না তিনি। কংগ্রেস সূত্র বলছে। কংগ্রেস সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আজ উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মনমোহন সিংহ অবশ্য বললেন, “আমি সব সময়েই বলে এসেছি, আমার মন্ত্রিসভায় রাহুল স্বাগত।” যে মন্তব্যকে গাঁধী পরিবারের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আনুগত্যের বার্তা হিসেবেই দেখছে কংগ্রেস শিবির। ‘বড় দায়িত্ব রাহুল কবে নেবে, সেই সিদ্ধান্ত ওকেই নিতে হবে’, সনিয়া গাঁধীর এই মন্তব্যের পরেই রাহুল জানিয়ে দেন, দায়িত্ব নিতে তিনি প্রস্তুত। এর পরেই দল না সরকার, কোথায় দায়িত্ব নেবেন তিনি, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কংগ্রেসের একাংশের মত ছিল, রাহুলের উচিত গ্রামোন্নয়ন বা মানবসম্পদ উন্নয়নের মতো মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে আমজনতার জন্য কাজ করা। দলের এই নেতাদের বক্তব্য, দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের এখনও দু’বছর বাকি। এখন মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে রাহুলের পক্ষে কাজ করে দেখানো সম্ভব হবে। যা পরের ভোটে পুঁজি করতে পারবে কংগ্রেস। তা ছাড়া, রাহুল মন্ত্রিসভায় এলে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রশাসনে একটি ঝাঁকুনি দেওয়া সম্ভব হবে।
বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণও আজ বলেন, “আমরা চাই রাহুল মন্ত্রিসভায় আসুন। তাঁকে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার জন্য আগেই আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আমন্ত্রণ এখনও রয়েছে।” তবে দলের অন্য একটি অংশ কম বয়স এবং অনভিজ্ঞতার কারণে রাহুলকে বিরোধীদের আক্রমণ থেকে আড়াল করে চলার পক্ষপাতী। যদিও কৃষ্ণ বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল, রাহুল গাঁধীর উচিত সরকারে যোগদান করা এবং সরকার চালাতে যে ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয় তার সমাধান এক সঙ্গে খুঁজে বার করা।”
কংগ্রেস সূত্র অবশ্য বলছে, শেষ পর্যন্ত এখন সরকারে না আসাই সাব্যস্ত করেছেন রাহুল। লোকসভা ভোটের আগে দলের কাজই করতে চান তিনি। এই অবস্থায় তাঁকে কার্যকরী সভাপতি করার দাবি উঠেছে কংগ্রেসে। বিশেষ করে সনিয়া যখন অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাঁকে প্রায়ই বিদেশ যেতে হচ্ছে। খুব শীঘ্রই সনিয়ার ফের বিদেশ যাওয়ার কথা। তার আগেই সংগঠনে রাহুলের বাড়তি দায়িত্বের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে প্রদান বিরোধী দল বিজেপি অবশ্য চাইছে, রাহুল মন্ত্রিসভাতেই যোগ দিন। দলের এক নেতার কথায়, “রাহুল গাঁধী সরকারে এলে বিজেপি-র পক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ শানানো সোজা হবে। এত দিন পর্যন্ত কোনও দায় নিচ্ছিলেন না রাহুল। কিন্তু মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে দুর্নীতি থেকে মূল্যবৃদ্ধি সমস্ত প্রশ্নে তাঁকে দায়ী করতে
পারবে বিজেপি। প্রশাসক হিসেবে তাঁর ব্যর্থতার দিকগুলিও দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা যাবে।” |