রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বার বাম আমলে নিযুক্ত মহিলা কন্ডাক্টরদের বাসে টিকিট বিলির কাজের বদলে অন্য দায়িত্ব দিচ্ছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার নিগমের সদর দফতর কোচবিহার পরিবহণ ভবনে এনবিএসটিসির পরিচালন বোর্ডের বৈঠকে ওই বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অভিযোগ করেন, মহিলাদের বাস কন্ডাক্টর হিসাবে নিয়োগ করা বাম আমলের অমানবিক কাজ ছিল। বাম আমলে প্রমোশন পাওয়া কর্মীদের তালিকা তৈরি করে পদাবনতি ঘটানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “সংস্থার মৃত কর্মীদের পোষ্য বেশ কিছু মহিলাকে কন্ডাক্টর পদে নিযুক্ত করা হয়। ওই সিদ্ধান্ত অমানবিক ও ২০০ শতাংশ ভুল ছিল। ভিড় বাসে মহিলাদের সমস্যা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে ওই মহিলাদের আর বাসে কন্ডাক্টরের কাজ করানো হবে না। তাঁরা যাতে মর্যাদাসম্পন্ন অন্য কাজ পান সেটা দেখা হচ্ছে।” এনবিএসটিসি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সংস্থায় মোট মহিলা কন্ডাক্টর ৭২। তাঁদের কোচবিহারের বিভিন্ন রুটের সিটি বাসে রোটেশনে টিকিট বিলির কাজে নামান হয়েছে। এনবিএসটিসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুপ্রিয় কর অবশ্য বলেছেন, “২০০৭ সাল থেকে প্রায় তিন বছর আমি দায়িত্বে থাকার সময় কোনও মহিলা কন্ডাক্টর নিয়োগ করা হয়নি। তার আগে কী হয়েছে সেটা বলা সম্ভব নয়।” নিগমের পরিচালন বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, “মহিলাদের নিয়োগ করাটা অমানবিক ও ভুল বলে যাঁরা মনে করছেন করুন। ওই মহিলাদের অফিসের হাল্কা কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ চেয়ারম্যান হয়ে ওই মহিলাদের অনেককে বাসের কাজে দায়িত্ব দেন।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অভিযোগ করেন, বাম আমলে বেআইনি পদোন্নতির জন্য ফি মাসে সংস্থার ৬০ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে এনবিএসটিসির উন্নয়নে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। গৌতমবাবু বলেন, “পুজোর আগে ৩০টি নতুন বাস কেনা হবে। আরও ৩০টি বাস মেরামত হবে। উত্তরবঙ্গের আন্তঃজেলা বিভিন্ন রুটে ওই বাস চালানো হবে। কোচবিহারের দোতালা বাস দুটিও ফের মেরামত করে রাস্তায় নামানো হবে।” কোচবিহার সার্কিট হাউজে এদিন জেলার উন্নয়ন তহবিলের বৈঠকেও যোগ দেন গৌতমবাবু। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে কলকাতায় কোচবিহার ভবনের উন্নয়নে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা খরচ করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ওই বরাদ্দ দেবে। এ ছাড়াও শিলিগুড়ির কোচবিহার ভবন সংস্কার করা, কলকাতার কোচবিহার ভবনের এসি রুমের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তও ওই বৈঠকে চূড়ান্ত হয়।” |