পিছিয়ে থাকা জেলার উন্নয়নে ‘ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ড’ বা বিআরজিএফ নামে বড় অঙ্কের বিশেষ তহবিল মঞ্জুর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রতিশ্রুত অর্থের কিছুটা দিয়েও দিয়েছে। কিন্তু ওই প্রকল্পে কেন্দ্রের দেওয়া টাকা ঠিকমতো খরচ করতে পারছে না রাজ্যের কয়েকটি দফতর। কেন? সেই কারণ খুঁজতে আজ, শনিবার মহাকরণে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ত, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পঞ্চায়েত, বিদ্যুতের মতো ১২-১৪টি দফতরের সচিবদের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
ক্ষমতায় এসে আর্থ-সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা ১১টি জেলার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে বাড়তি অনুদান চেয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। ওই জেলাগুলি হল বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মেনে কেন্দ্রীয় সরকার পিছিয়ে থাকা ওই জেলাগুলির সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য গত বছর ৮,৭৫০ কোটি টাকার একটি তহবিল অনুমোদন করে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে বিভিন্ন দফতরের নানান প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ইতিমধ্যে ১,৮০০ কোটি টাকা পাঠিয়েও দিয়েছে কেন্দ্র।
বিভিন্ন দফতর ওই টাকার কতটা খরচ করেছে, সম্প্রতি সেই বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে অর্থ দফতর। তাতে বলা হয়েছে: বিদ্যুৎ, পূর্ত, পুর, জনস্বাস্থ্য কারিগরির মতো কয়েকটি দফতর তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির কাজ বেশ খানিকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলেও কয়েকটি দফতর কাজের নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে। অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, সব থেকে দ্রুত কাজ করছে বিদ্যুৎ ও পূর্ত দফতর। বিদ্যুৎ দফতর ইতিমধ্যে পিছিয়ে থাকা জেলাগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য দরপত্র ডেকে কাজের বরাত দিয়ে দিয়েছে। পূর্ত দফতরের কাজের অগ্রগতিও বেশ প্রশংসনীয় বলে ওই কর্তা জানান।
পিছিয়ে থাকা জেলাগুলির উন্নয়নের কাজের গতি সম্পর্কে জানতে সম্প্রতি বৈঠকে করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। সেই বৈঠকে তিনি দফতরগুলিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকল্পের টাকা মঞ্জুর হয়ে গেলেও নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতায় কয়েকটি দফতরের কাজে এখনও ঢিলেমি রয়েছে। মহাকরণের খবর, এই কারণেই এ বার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বৈঠক করে পরিস্থিতি বুঝে নিতে চাইছেন। এক সরকারি মুখপাত্র জানান, অনগ্রসর জেলার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার পরে পরিবহণ সমস্যা নিয়েও বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবহণ সমস্যা মেটাতে মমতা যে-মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করে দিয়েছেন, তাদের পেশ করা কয়েকটি সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হবে বৈঠকে। |