হাবরার কংগ্রেস নেতা বাপি চৌধুরী-সহ দু’জনকে খুনের ঘটনায় রাজস্থান থেকে ধরা পড়ল অন্যতম অভিযুক্ত চন্দ্রশেখর দেবনাথ। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “জোড়া খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিল এই ব্যক্তি। পুলিশ তাকে অনেক দিন ধরে খুঁজছিল।”
২০০৯ সালের ২১ ডিসেম্বর হাবরার প্রফুল্লনগরে রক্তদান শিবিরের মধ্যে গুলি-বোমা নিয়ে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। খুন হন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা বাপি। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হতে হয় স্থানীয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী রণজিৎ রায় ওরফে নিগ্রো। এই ঘটনায় ‘তৃণমূল ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত রাজু দামের নাম মূল অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে। যার জেরে সে সময়ে রাজ্য রাজনীতির বিরোধী আসনের দুই শরিক তৃণমূল ও কংগ্রেসের সম্পর্কের অবনতি হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এলাকা দখলের লড়াই, সাট্টা-জুয়ার বখরা-সহ বেশ কিছু কারণ ছিল এই খুনের পিছনে। মহিলা-ঘটিত কারণেও রাজুর সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল বাপির।
এ পর্যন্ত ১৭ জনের নামে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে ১৪ জন। তাদের মধ্যে কয়েক জন জামিন পেয়েছে। মূল অভিযুক্ত রাজু দাম এখনও পলাতক। পুলিশের দাবি, চন্দ্রশেখরও খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। সে নিজেও ছিল ‘অপারেশনে।’ যে বোমা ব্যবহার হয়েছিল খুনের ঘটনায়, তা তৈরি করেছিল সে।
ঘটনার পর থেকে এলাকা-ছাড়া ছিল চন্দ্রশেখর। রাজস্থানে গিয়ে হাতুড়ে চিকিৎসকের কাজ জুটিয়ে নিয়েছিল হাবরার দেশবন্ধু পার্ক এলাকার ওই যুবক। গোপন সূত্রে তার খোঁজ পেয়ে হাবরার পুলিশ যোগাযোগ করে রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে। সে রাজ্যের পালি জেলার সইন্দ্রা থানার পুলিশ গ্রেফতার করে চন্দ্রশেখরকে। আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঠান জেলহাজতে। হাবরা থানার পুলিশের একটি দল পরে সইন্দ্রা যায়। বৃহস্পতিবার রাতে চন্দ্রশেখরকে আনা হয় হাবরায়। শুক্রবার বারাসত আদালতের বিচারক সোমবার পর্যন্ত তাকে জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী তথা হাবরার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, “চন্দ্রশেখর গ্রেফতার হওয়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় কাদের মদত ছিল, তা এ বার প্রকাশ্যে আসবে। বাকি দুষ্কৃতীরাও যাতে ধরা পড়ে, সে জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।” |