রাস্তা কেটে বিক্ষোভ বাদুড়িয়ায়
শেষ কবে মেরামতি হয়েছে তা অনেক ভেবেও মনে করতে পারেন না এলাকার মানুষ। অথচ বর্তমানে রাস্তার যা দশা তাতে হাত-পা আস্ত রেখে চালাফেরা করাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাতে কি? প্রশাসনের কোনও হুঁশই নেই রাস্তা সারানোর ব্যাপারে। এই অবস্থায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভ উগরে দিয়ে কয়েকটি জায়গায় রাস্তা কেটে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় মানুষ। এর ফলে শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাট থেকে কাঠাখাল ইছামতীর নদীর ঘাট পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আচমকা এণন পরিস্থিতিতে পড়ে চরম নাকাল হতে হয় স্কুলের পড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী সকলকেই। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এতদিন বহু আবেদনেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। তাই যতক্ষণ না প্রশাসন এই রাস্তা মেরামত করছে ততক্ষণ রাস্তা কাটা থাকবে।”
ছবি: নির্মল বসু।
বাদুড়িয়া ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটিয়াহাট থেকে কাঠাখাল ইছামতী নদীর ঘাট পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তার আর্ধেক পুরসভার ১১ থেকে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। বাকি অংশ পড়ে বাজিতপুর ও আটুরিয়া পঞ্চায়েতের মধ্যে। ওই এলাকার কোড়গাছি, পুঁড়ো, লক্ষ্মীকান্তপুর, কাটিয়াহাট, বেলঘরিয়া-সহ ১০-১২টি গ্রামে বেশ কয়েক হাজার মানুষের বাস। স্কুল-কলেজ, সরকারি দফতর থেকে শুরু করে হাসপাতালে যেতে স্থানীয় মানুষের এই একটি রাস্তাই সম্বল। সম্প্রতি লক্ষ্মীকান্তপুরে ইছামতী নদীর উপরে সেতুর কাজ শুরু হওয়ায় সরঞ্জাম নিয়ে ভারী ভারী ট্রাক, ট্রেলার ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছে। তা ছাড়া এলাকায় কয়েকটি ইটভাটা থাকায় কয়লা ও ইট নিয়ে বড় বড় লরি যাওয়া-আসা করে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, একে রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। তার উপর ভারী ভারী ট্রাক যাতায়াতের কারণে রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ওই সব গর্তে বৃষ্টিতে জল জমে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উটেছে। স্কুলে যেতে গিয়ে ছথেলেমেয়েদের জামাকাপড় ভিজে যাচ্ছে। কেউ পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙছে। রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে বাস তলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভ্যানরিকশা, সাইকেলেও যাতায়াত দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম মণ্ডল, উজ্জ্বল কুণ্ডু, জয়ন্ত আমিনস লক্ষ্মী মণ্ডলরা জানান, রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা তো দূরের কথা, ভ্যানরিকশায় যাতায়াতই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার অবস্থার কারণে পথেই প্রসবের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু রাস্তা সারানোর ব্যাপারে কারও হুঁশ নেই। স্কুলছাত্রী রত্না দাস, নুরজাহান খাতুন বলে, “প্রায়ই রাস্তার গর্তে জমা জলে পড়ে গিয়ে ভিজে জামাকাপড়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। তাই আমরা আলাদা জামাকাপড় নিয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় বুঝতে না পেরে গর্তে পড়ে অনেকের হাত-পাও ভেঙেছে।”
বাদুড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। মানুষের ক্ষোভ স্বাভাবিক। ওই রাস্তা দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। এ জন্য তাদের আমরা চিঠিও দিয়েছি। ওরা জানিয়েছে রাস্তার সারানোর জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। বর্ষার পরে কাজ শুরু করা হবে।” একই সঙ্গে তাদের বক্তব্য, এলাকায় ইটভাটা থাকার জন্য ভারী ভারী ট্রাক যাতায়াতের কারণে রাস্তা দ্রুত খারাপ হচ্ছে। এ জন্য ভাটা মালিকদের আলোচনায় ডাকা হয়েছে। তবে এখনই পাকাপাকি ভাবে সংস্কার না করে আপাতত ইট পেতে গর্ত বোজানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে বসিরহাট মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.