আজ শুরু ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলন
৪০-এর গেরোয় দীপক-পুত্র, সম্পাদক সম্ভবত ‘নতুন মুখ’
দৌড়ে থাকলেও সম্ভবত ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক হচ্ছেন না সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের পুত্র সুদীপ্ত সরকার। কারণ, তাঁর বয়স ৪০ পেরিয়ে গিয়েছে। এক যুব নেতার বক্তব্য, “এ বার সম্পাদক হিসেবে সুদীপ্তদাই যোগ্য ছিলেন। তাঁর নাম আলোচিতও হয়। তবে ৪০ বছরের বেশি বয়সের কেউ সংগঠনের পদে থাকতে পারেন না।” তবে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সরে যাচ্ছেন কমল পলমল। সরছেন জেলা সভাপতি জয়ন্ত কয়োড়ীও। কে নতুন সম্পাদক ও সভাপতি হবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। আজ, শনিবার থেকে মেদিনীপুরে শুরু হচ্ছে ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলন। তার আগে শুক্রবার সিপিএমের যুব- ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সভাপতি-সম্পাদক পদে ‘নতুন মুখ’ আনা হবে। এর ফলে সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা ‘উজ্জীবিত’ হতে পারেন।
প্রস্তুতি। মেদিনীপুরের কলেজ মোড়ে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
জেলার সম্পাদক ও সভাপতি হতে পারেন, এমন কয়েকজন যুব নেতার নাম নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনাও হয়। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে যে সব নাম আলোচিত হয়েছে, তার মধ্যে প্রশান্ত ঘোষ, কুন্দন গোপ, মহসিস মাহাতো, চিন্ময় পাল, দিলীপ সাউ প্রমুখ যুব নেতার নাম রয়েছে। আজ, শনিবার সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক রয়েছে। এই বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাক্তন এক যুব নেতার মন্তব্য, “পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। কয়েকজন যুব নেতা খুব ভাল কাজ করেন। তবে তাঁরা এমন এলাকায় থাকেন, সেখানে থেকে ‘সক্রিয়’ ভাবে সংগঠন করতে পারবেন না। অন্তত, এই পরিস্থিতিতে। তাই তাঁদের নাম আলোচনায় আসেনি।” আজ, শনিবার থেকে মেদিনীপুরে শুরু হচ্ছে ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলন। চলবে সোমবার পর্যন্ত। সম্মেলন শুরুর আগে কলেজ মোড়ে প্রকাশ্য সমাবেশ হবে। উপস্থিত থাকবেন মহম্মদ সেলিম, আভাস রায়চৌধুর। সভার সমর্থনে যে পোস্টার ছাপানো হয়েছে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে বক্তার হিসে নাম রয়েছে দীপক-পুত্রের। তাঁকে সভার সভাপতিও করা হয়েছে।
সুদীপ্ত ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তবে দীপক-পুত্র কেন সভার সভাপতি হবেন, তা নিয়ে সংগঠনের মধ্যেই নানা প্রশ্ন ওঠে। বিতর্ক শুরু হয়। বিশেষ করে যে পোস্টারে আবার জেলা সভাপতি জয়ন্ত কয়োড়ীর নাম নেই। যুব সংগঠনের জেলা সম্মেলন নিয়ে গত মঙ্গলবার সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানেও কমল পলমলের পাশে ছিলেন সুদীপ্ত। কেন? যুব নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে সুদীপ্ত সরকারই সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সভাপতি জয়ন্ত রাজনৈতিক ‘অস্থিরতার’ জেরে ‘নিস্ক্রিয়’ হয়ে পড়েছেন। সংগঠনের কাজ দেখভাল করতে পারেননি। তাঁর জায়গায় দীপক- পুত্রকেই সভাপতির কাজ চালানোর ‘অনুরোধ’ করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে প্রকাশ্য সমাবেশের সভাপতি করা হয়েছে সুদীপ্তকে। নেতৃত্বের আরও দাবি, সম্পাদক পদে তাঁর নাম আলোচিত হচ্ছে জেনে সুদীপ্ত নিজে জানান, তিনি এই পদে বসতে ‘অনিচ্ছুক’। ডিওয়াইএফের জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যা ৯৩। জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সংখ্যা ১৮। এ বার এই সদস্য সংখ্যার সমান্য হেরফের হতে পারে।
মেদিনীপুর শহরের জেলা পরিষদ হলে সম্মেলন হবে। প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি যোগ দেবেন। এরমধ্যে ৬০ জন যুবতী। এক সময় পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রতিটি এলাকায় ডিওয়াইএফের ‘মজবুত’ সংগঠন ছিল। তবে রাজ্যে পালাবদলের পর অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টেছে। কমবেশি সর্বত্র যুব তৃণমূলের প্রভাব বেড়েছে। পরিস্থিতির জেরে একাংশ লোকাল ও জোনাল কমিটির সম্মেলন এলাকার বাইরে ‘গোপনে’ করতে হয়েছে। জেলা সম্পাদক কমল পলমলও মানছেন, “সম্মেলন করতে গিয়ে আমাদের কমরেডদের লুকোচুরি খেলতে হয়েছে। তার মধ্যেই ১৭৩ টি লোকাল কমিটির সম্মেলন, ৩৩ টি জোনাল কমিটির সম্মেলন হয়েছে।” সম্মেলনে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠতে পারে। এই সময়ের মধ্যে যুবতীদের ‘গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। এক যুব নেতার বক্তব্য, “প্রায় ৫০০ জন প্রতিনিধির মধ্যে ৬০ জন যুবতী। সংগঠনের মধ্যে যুবতীদের যে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, তা এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট।” প্রত্যাশিত ভাবেই সম্মেলনে ‘আমন্ত্রণ’ পাননি যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাপস সিংহ। যেখানে সম্মেলন হচ্ছে, তার অদূরেই তাপসের বাড়ি। দীপক সরকারের সঙ্গে তাঁর ‘বিরোধ’ রয়েছে আগে থেকেই। সম্মেলনে তারই ছাপ পড়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.