ভাইঝিকে ঝাড়ফুঁক করতে এসে কাকিমাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল বীরভূমের নানুর থেকে আসা এক ওঝার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান শহরের হাটুদেওয়ান এলাকায় ওই ঘটনার পরেই ওঝাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন বাড়ির লোকজন। বরজান শেখ রাজা ওরফে ফকির নামে ওই ওঝা আপাতত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার। হাটুদেওয়ানের এক রিকশাচালকের তরুণী মেয়ে কয়েক দিন আগে থেকে নিজেকে মৃত এক মুসলিম তরুণী বলে পরিচয় দিতে শুরু করেছিলেন। তাঁকে ঝাড়ফুঁক করতে নানুরের বালুগুনি গ্রাম থেকে ওঝা নিয়ে আসা হয়। ঝাড়ফুঁকের পরে তরুণীর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করাতে হয়।
কিন্তু এই খবর পেয়ে রেগে যান ওঝা। বাড়িতে ফোন করে তিনি দাবি করেন, ঝাড়ফুঁকের কাজ শেষ হয়নি। সে কারণে তাঁকে ফের আসতে বলা হয়। বর্ধমান থানায় তরুণীর কাকিমা বলেন, “শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ বরজান শেখ ওদের বাড়িতে আসেন। রাত দেড়টা নাগাদ বলেন, তোমাদের বাড়িতে জিন ঢুকেছে। সেটাকে প্রথমে তাড়াতে হবে। তার পরে পেত্নিটাকে দেখছি। আমি যে ঘরে বাচ্চা নিয়ে ঘুমোচ্ছিলাম সেখানে ঢুকে বলেন, এই ঘরেই জিন রয়েছে।” তাঁর স্বামীর অভিযোগ, “তোমার বউ আর মেয়ে শুয়ে রয়েছে। ওদের ডাকতে হবে না। আমি কিছু ক্ষণ একা মন্ত্রতন্ত্র পড়ব। কেউ যেন আমায় না ডাকে। এই বলে তিনি দরজা বন্ধ করে দেন।”
‘ধর্ষিতা’র অভিযোগ, “দরজা বন্ধ করে উনি আমার নাকের সামনে কিছু একটা ধরেন। ঝাড়ফুঁকের অঙ্গ মনে করে চুপ করে থাকি। এর পরে উনি আমায় ধর্ষণ করেন। কিন্তু একটা অজানা গন্ধে হাজার চেষ্টাতেও গলা দিয়ে শব্দ বেরোয়নি।” তাঁর স্বামীর অভিযোগ, এর পরেই দরজা খুলে ওঝা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ইতিমধ্যে তাঁর স্ত্রীও কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসেন। তাঁর কাছে সব শুনে তিনি ও তাঁর দাদা মিলে ওঝাকে পাকড়াও করে পেটান। খবর পেয়ে এলাকার লোকজনও ছুটে আসেন। ওঝাকে দু’পা বেঁধে রাতভর ফেলে রাখা হয়। সকালে বর্ধমান থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। কিন্তু থানায় এসে ‘অসুস্থ’ বোধ করায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগকারিণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে। ওই লোকটি সুস্থ হয়ে ওঠা মাত্র তাকে আদালতে হাজির করানো হবে।” |