দু’জন শিক্ষক। একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বুধবার বদলি হন অন্য স্কুলে। কিন্তু যাওয়ার আগে সহকর্মীকে দায়িত্ব না-বুঝিয়ে দেওয়ায় দরজা খোলেনি। বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগর শিশু শিক্ষা নিকেতন প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা। ওই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হয়। বন্ধ থাকে মিড ডে মিল। ঘটনার প্রতিবাদে অভিভাবকদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিভাবকদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় পঠনপাঠন লাটে উঠেছে। খবর পেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক স্কুলে গেলে তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিদর্শক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সৃষ্টি গোমডেন বলেন, “স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতি হওয়ায় তিনি অন্য একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি স্কুলের সহ শিক্ষিকা মীরা ধরকে দায়িত্ব না বুঝিয়ে আমাকে স্কুলের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ক্লাসরুম, মিড ডে মিলের রান্নাঘরের চাবি ও হাজিরা খাতা তিনি আমার কাছে জমা দেন। ওই কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কেন এমনটা হল তা খতিয়ে দেখা হবে। সোমবারের মধ্যে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।” প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৭৪ পড়ুয়া রয়েছে ওই স্কুলে। শিক্ষক ছিলেন দু’জন। তাঁদের একজন শ্যামল চন্দ ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ২৭ অক্টোবর শ্যামলবাবুর পদোন্নতি হয়। শিক্ষা দফতর গত ১ অগস্ট তাঁকে রায়গঞ্জের কসবা প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। বুধবার তিনি ওই স্কুলে কাজে যোগ দেন। সহ শিক্ষিকা মীরা দেবীর বলেন, “শ্যামলবাবু মঙ্গলবার স্কুলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যাননি। দুটি ক্লাসরুম, মিড ডে মিলের রান্নাঘরের চাবি ও হাজিরা খাতাও দেননি। ওই কারণে এ দিন পড়ুয়াদের বারান্দায় বসিয়ে ক্লাস নিতে বাধ্য হয়েছি। মিড ডে মিলের রান্না করাও সম্ভব হয়নি।” যদিও শ্যামলবাবু বলেন, “এক সপ্তাহ ধরে মীরা দেবীকে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শকের হাতে স্কুলের চাবি-হাজিরা খাতা তুলে দিই।” অভিভাবকদের তরফে অভিজিত সাহা জানান, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোট চারটি সরকারি স্কুল আছে। ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির সভাপতি স্থানীয় কাউন্সিলর রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “শ্যামলবাবু সহ শিক্ষিকাকে দায়িত্ব না-বুঝিয়ে কেন বিদ্যালয় পরিদর্শককের হাতে স্কুলের চাবি ও হাজিরা খাতা দিলেন সেটা আমরা জানতে চেয়েছি।” |