পাশের কক্ষে ক্লাস নেওয়ার সময় চেঁচামেচি করায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী সহ তিন জনকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে নকশালাবাড়ি উত্তর স্টেশনপাড়া হিন্দি প্রাথমিক স্কুলে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শিক্ষকের নাম ভোলা রায়। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী গৌরী হরিজনকে বেত দিয়ে মার দেয়। এমনকী তাঁর চুলের মুঠি ধরে পাঁচিলে ঠুকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও তিনি দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নেহাকুমারি পাসোয়ান, অজয় শর্মা সহ কয়েকজনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। গৌরীকে নকশালবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে।
দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “ওই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” যদিও ওই শিক্ষক ভোলাবাবু মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তিনি কাউকেই মারধর করেননি। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে। আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দ্বিতীয় পিরিয়ড চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের মারধরের ঘটনা ঘটে। গৌরীর বাবা ভীমলাল হরিজন, অজয়ের মা ঊষা দেবী, নেহার বাবা সুপনবাবুর অভিযোগ, ওই শিক্ষক মাঝে মধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের মারধর করেন। তা নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এদিন পাশের ক্লাসে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা বসে ছিল। তাঁরা নিজেদের মধ্যেই কথা বলছিল। সেই সময় পাশের ক্লাস থেকে ওই শিক্ষক বেত নিয়ে গিয়ে সবাইকে মার দেওয়া শুরু করে। বেশ কয়েকজনকে ছাত্রছাত্রীকে মারধর করেন তিনি। গৌরীর মাথার চুল ধরে পাঁচিলের সঙ্গে ঠুকে দেয়। বেতের আঘাতে অজয়ের হাত ফুলে গিয়েছে। নেহার পিঠে আঘাত লেগেছে। ওই ঘটনা জানাজানি হতেই আশেপাশের এলাকা থেকে সমস্ত অভিভাবকরা স্কুলে ভিড় করে। তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তৃণমূল সমর্থকরাও স্কুলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবি করেন। তৃণমূলের নকশালবাড়ির সাধারণ সম্পাদক রাজীব বিশ্বাস বলেন, “ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরে অভিযোগ উঠছে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত রয়েছেন। আমরা তাঁর উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।” সিপিএমের নকশালবাড়ি লোকাল কমিটির সম্পাদক তথা ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অনুজ সিংহ জানান, ওই শিক্ষক বহুদিন আগে নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি ছেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমিও শুনেছি ওই শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের খুব খারাপ ভাবে মারধর করেছেন। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।” |