ভক্তিনগর থানাকে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আওতায় আনার বিরোধিতায় আগামী সোমবার জলপাইগুড়ি শহরে ১২ ঘণ্টা বন্ধ পালনের হুমকি দিল নাগরিক মঞ্চ। বুধবার জলপাইগুড়ি নাগরিক উন্নয়ন মঞ্চের তরফে ওই ঘোষণা করা হয়েছে। মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনার পরে ওই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। জেলা ব্যবসায়ী সমিতি এবং তৃণমূল কংগ্রেস নীতিগত ভাবে ওই বনধের বিরোধিতা করেছে। মঞ্চের কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার বলেন, “আগামী সোমবার বারো ঘণ্টার বনধ পালিত হবে। যে ভাবে জলপাইগুড়ি শহরবাসীর ভাবাবেগকে গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা ভাবে ভক্তিনগরকে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, তাতে বন্ধ ডাকা ছাড়া অন্য উপায় নেই।” গত মঙ্গলবার রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক জলপাইগুড়িতে জানান, ভক্তিনগর থানা শিলিগুড়ি কমিশনারেটের অর্ন্তভুক্ত হলেও আপাতত তার বিচারবিভাগের এক্তিয়ার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতেই থাকছে। কিন্তু অদুর ভবিষ্যতে শিলিগুড়ি চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিকাঠামো তৈরি হবে। তখন জলপাইগুড়ি জেলা আদালত থেকে ভক্তিনগরের বিচার বিভাগীয় এক্তিয়ার স্থানান্তরিত হবে বলে আইনমন্ত্রী জানিয়ে দেন। জলপাইগুড়ি জেলা আদালত চত্বরের বার আসোসিয়েশন ভবনে গিয়েও আইনমন্ত্রী বিষয়টি জানান। আইনমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পরেই বার আসোসিয়েশন এবং জলপাইগুড়ি উন্নয়ন মঞ্চ বুধবার বৈঠক করে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত জেলা আদালতে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে বার আসোসিয়েশন। বার আসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিনন্দন চৌধুরী বলেন, “মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী ভক্তিনগর নিযে যে ঘোষণা করেছেন, তাতে আমরা হতাশ. জলপাইগুড়ি শহরের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তার প্রতিবাদেই বনধ এবং কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত. আগামী শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত জেলা আদালতে কোনো আইনজীবী কাজে যোগ দেবেন না।” তৃণমূল কংগ্রেস আগামী সোমবারের শহর বনধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তবে বনধের দিনে রাস্তায় নেমে সক্রিয় বিরোধিতা করা হবে কি না তা নিয়ে দলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তৃণমূলের তরফে এদিন তাদের দলের অবস্থান স্পষ্ট করে জলপাইগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “নীতিগত ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস বন্ধ বা অবরোধের বিরোধী। সে কারণে এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না। প্রথমেই বন্ধের মতো চরম অবস্থান না নিয়ে আরও নানারকম আন্দোলন পন্থা নেওযা যেত। ভক্তিনগরের বাসিন্দারা কি চান সে বিষয়টি দলের তরফে যাচাই করা হচ্ছে।” উন্নয়ন মঞ্চের ডাকা বন্ধের বিরোধিতা করেছে জেলা ব্যবসাযী সমিতিও। ঘটনাচক্রে মঞ্চের সহ সভাপতি পদে রয়েছেন জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সাধন বসু। এ দিন সাধনবাবু বলেন, “আমরা কোনও বন্ধকে নীতিগত ভাবে সমর্থন করি না।” |