অসমে নতুন করে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় ডুয়ার্সে আবার শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। রবিবার পর্যন্ত যে সংখ্যা ছিল ৯৮৪, দু’দিনে তা আরও ৬০ বেড়েছে। সরকারি হিসেবে মোট শরণার্থীর সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ১০৪৪। এর মধ্যে পুরুষ ৪৬০, মহিলা ৪৪৫ ও শিশু ১৪৫।
জুলাইয়ের শেষ দিকে নামনি অসমে সংঘর্ষ শুরুর পরে সেখান থেকে ঘরছাড়া মানুষের স্রোত এই রাজ্যে আসতে শুরু করার পর২৮ জুলাই বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, শরণার্থীরা যত দিন প্রয়োজন, রাজ্য সরকারের আশ্রয়ে থাকতে পারেন। তিনি সে দিন বলেছিলেন, “ওরা আমাদের ভাই বোন। ওদের সব দায়িত্ব সরকারের। যদি তাঁরা এখনই না ফিরতে চান, যত দিন থাকবেন আমরা পূর্ণ আশ্রয় দেব।”
ওই শরণার্থীরা ডুয়ার্সের নানা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। তার মধ্যে প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে বেশ কয়েকজনের মসজিদে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন গ্রামে আত্মীয়স্বজনদের আশ্রয়ে রয়েছেন। তবে মসজিদে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। |
পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় প্রশাসন বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে দু’টি অস্থায়ী তাঁবু বানিয়ে দিলেও সমস্যা মেটেনি। জুলাইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। এ ছাড়া প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিএমের আনিসুর রহমান সহ বামফ্রন্টের এক প্রতিনিধি দলও আলাদা ভাবে ওই শিবির পরিদর্শন করেন।
এ দিকে, নামনি অসমে গোষ্ঠী সংঘর্ষ না-থামায় শরণার্থীদের অনেকেই ডুয়ার্সেই পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়ায় পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে প্রশাসন। এই ব্যাপারে এলাকার রাজনৈতিক দলগুলির সাহায্য নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের বিডিও সৌমেন মাইতি বলেন, ‘‘শীঘ্রই সর্বদল বৈঠক ডাকা হবে। সরকারি জমি যাতে বেহাত না-হয় সে জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চাওয়া হবে।” প্রশাসনের কর্তারা জানতে পেরেছেন, শরণার্থীদের কাছে বেশি দামে জমি বিক্রি করতে এই এলাকার কিছু দালাল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শরণার্থীদের কয়েকজনও এখানে বাড়ি ও দোকান কেনার চেষ্টা করছেন বলে প্রশাসনের কাছে খবর। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আলিপুরদুয়ার-২ বিডিওকে বলা হয়েছে।” |