অধিক অনগ্রসর মুসলিমদের আরও সংরক্ষণের দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে অধিক অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের জন্য ১০ শতাংশ সরকারি চাকরি সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এ বার তার পুরোটাই অনগ্রসর মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ করার দাবি তুলল বামফ্রন্ট। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান এবং প্রবোধ সিংহের নেতৃত্বে বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলের ছয় সদস্যের এক প্রতিনিধিদল বুধবার মহাকরণে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করে অনগ্রসর মুসলিমদের জন্য এই বাড়তি সংরক্ষণের দাবি জানায়। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি বা ওবিসি-দের জন্য সরকারি চাকরিতে যে-সাত শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে, তা অমুসলিম অধিক অনগ্রসরদের জন্য বরাদ্দ করার আর্জি জানান তাঁরা।
আনিসুর জানান, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্যে ওবিসি-দের জন্য সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের হার সাত শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হয়েছিল। ওই ১৭ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ বরাদ্দ ছিল অধিক অনগ্রসর সম্প্রদায়গুলির জন্য। বাকি সাত শতাংশ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে নতুন বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়কে তালিকাভুক্ত করেছে। আগে তালিকায় ছিল ১০৮টি সম্প্রদায়। এখন সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১৪৩। নতুন তালিকায় অনগ্রসর মুসলিমদের মধ্যে অধিক অনগ্রসর এবং অনগ্রসর এই দু’টি স্তরই রাখা হয়েছে। ফলে অধিক অনগ্রসর হিসেবে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত শ্রেণিগুলি আগে ১০ শতাংশ সরকারি চাকরির সংরক্ষণের যে-সুবিধা পেত, এখন তার পুরোটা আর তারা পাবে না। এর ফলে মুসলিম এবং অমুসলিম উভয় সম্প্রদায়েরই অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে অভিযোগ করেন আনিসুর।
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের তরফে অবশ্য আনিসুরের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ওই দফতরের এক মুখপাত্র এ দিন জানান, বাম আমলেও অধিক অনগ্রসর শ্রেণিতে শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন না। সেই সময়কার ১০৮টি ওবিসি সম্প্রদায়ের মধ্যে ৫৬টি শ্রেণিকে রাখা হয়েছিল অধিক অনগ্রসর হিসেবে। কিন্তু তার মধ্যেও ৪৯টি মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল। এখন ৩৫টি শ্রেণিকে নতুন করে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং তার মধ্যে ৩৩টিই মুসলিম সম্প্রদায়ের। তার মধ্যে ন’টি মুসলিম সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে অধিক অনগ্রসর স্তরে। এই অধিক এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি নির্ধারিত হয় একমাত্র অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত মাপকাঠিতে। কোনও সম্প্রদায়গত পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়। |