যানজটের সমস্যা এ শহরে দীর্ঘদিনের। সংকীর্ণ রাস্তার দু’পাশ দখল করে ঝুপড়ি-দোকান। যান নিয়ন্ত্রণের বালাই নেই। তার উপরে লেগেই রয়েছে দুই বাসের রেষারেষি আর লছিমনের অবাধ চলাচল। বড়সড় দুর্ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। তবে বেলডাঙার রাস্তা ঘাটের কোনও পরিবর্তন হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ীরা। আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু ছবিটা একই রয়ে গিয়েছে।
অবশেষে রাস্তার যান নিয়ন্ত্রণ সমস্যার সুরাহা করতে পথে নেমেছে পুরসভা। ১ অগস্ট থেকে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বেলডাঙা পুরসভার তরফে নিয়োগ করা হয়েছে কয়েক জন কর্মী। তাদের বেতনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে পুরসভার ভাঁড়ার থেকেই। এর আগে জেলা পুলিশের তরফে বেলডাঙাকে যানজটমুক্ত করার প্রতিশ্রুতিটুকুই মিলেছিল শুধু। তবে এ বার পুলিশের সঙ্গে পুরসভার উদ্যোগে শহরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বড়ুয়া মোড়, পাঁচরাহা মোড়, নেতাজি পার্ক মোড়, ছাপাখানা মোড়, হরিমতি স্কুল মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণ করছে পুরসভার ওই দশ কর্মী। |
পুরসভার এই উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি সাধারণ মানুষ। বেলডাঙার পুরপ্রধান অনুপমা সরকার বলেন, “যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শহরের মানুষ ও ব্যবসায়ী সংগঠণের একাধিক দাবি ছিল। তাঁদের দাবি মেনেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের তরফে ১০ জনের বেতনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকীদের নিয়ম মেনে নিয়োগ করছে পুলিশই। কোথায় কোথায় ওই কর্মীদের নিযুক্ত করা হবে তাও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে পুলিশের তরফেই।”
বেলডাঙা কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মুক্তাদির মোল্লা বলেন, “পুরসভা ও পুলিশের এই যৌথ পদক্ষেপে আমরা খুশি। রাস্তার যানজটে প্রবল ক্ষতির মুথে পড়তে হচ্ছিল ব্যবসায়ীদের। এর ফলে উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষ।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শীলা ঘোষ বলেন, “এই উদ্যোগ সত্যিই প্রসংশনীয়। আমরা আশা করছি এই ব্যবস্থায় মানুষ উপকৃত হবেন।” বেলডাঙা হরিমতি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা প্রতিভা রায় বলেন, “যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। অবশেষে একটা উপায় হয়েছে। আমরা পুরসভার উদ্যোগে খুশি। আশা করছি এর পরে আর শিক্ষিকা বা ছাত্রীদের স্কুলে আসতে হয়রান হতে হবে না।” এই যান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে ইতিমধ্যেই কিছু নির্দেশ জারি করেছে বেলডাঙা থানা। নির্দেশ অনুসারে, শহরের প্রধান রাস্তার উপরে কোনও হকারকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না। বড় বা ভারি যান সকালে অফিস টাইমে শহরে ঢুকতে পারবে না। রিকশা, ভ্যানের মতো ছোট গাড়ি কিংবা মোটর বা বাসও রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে দাঁড় করিয়ে দেওয়া যাবে না। রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণে খুশি বেলডাঙা এসআরএফ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজাতা মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিনের দাবি মেনে এই পদক্ষেপ শহররের কাজে লাগবে। পথ চলতি মানুষের সমস্যা মিটবে। দুর্ঘটনার সম্ভবনাও কমবে বলেই আশা রাখছি।” |