মেয়ের খুন হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা। এমন কী জঙ্গিপুর এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত থেকে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করে বাবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয় সাগরদিঘি থানার পুলিশকে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মঙ্গলবার বিকেলে বালানগরের শ্বশুরবাড়ি থেকেই উদ্ধার হল শ্যামলী মণ্ডলের (২০) মৃতদেহ।
মৃতার বাবা লালচাঁদ মণ্ডলের অভিযোগ, “ছ’মাস আগে বালানগরের ব্রজেন মণ্ডলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিই। তার পর থেকে ওকে বাপের বাড়ি আসতে দেয়নি ওর শ্বশুরবাড়ির লোক জন। মেয়ের মুখেই শুনেছি ব্রজেনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। প্রতিবাদ করায় আমার মেয়েকে মারধর করে ওরা। ১৪ জুলাই ফোন করে মেয়ে কান্নাকাটি করে। মারধরের কথাও বলে।” তিনি জানান, তাঁর মেয়ে তখন তাঁকে বলেছিল, তাঁকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তিনি বলেন, “সে দিনই মেয়ের বাড়ি ছুটে যাই। মেয়েকে নিয়ে আসতে চাইলে ওর শ্বশুর-শাশুড়ি বাধা দেয়। আরও এক লক্ষ টাকা চায়। বিয়ের সময়েও ওদের কথা মতো যৌতুক দিয়েছিলাম। ১৯ জুলাই আদালতে মেয়ের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধারের আর্জি জানাই।” |
লালচাঁদবাবুর আইনজীবী তারক মুখোপাধ্যায় বলেন, “২ অগস্ট আদালত শ্যামলী মণ্ডলকে উদ্ধারের নির্দেশ দেয় সাগরদিঘি থানার ওসি-কে কিন্তু সেই নির্দেশ থানায় পৌঁছনোর আগেই ৮ অগস্ট শ্যামলীর মৃত্যু হয়। আমরা নিশ্চিত তাঁকে খুন করা হয়েছে।” শ্যামলীর মা আরতি মণ্ডল বলেন, “গ্রামবাসীদের কাছে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পাই। ওর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখি বারান্দায় মেয়েটার নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। বাড়ি ফাঁকা। আমার মেয়েটাকে খুন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে ওই বাড়ির লোকজন।” শ্যামলীর দেহের ময়না-তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, খুনই করা হয়েছে তাঁকে। লালচাঁদবাবু সাগরদিঘি থানায় খুনের অভিযোগও দায়ের করেছেন। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে অভিযুক্ত ব্রজেন মণ্ডল, শ্যামলীর শ্বশুর ঝড়ুলাল মণ্ডল ও শাশুড়ি সূর্য মণ্ডল পলাতক, তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” |