বছর তিনেক আগে ভেঙেছে সেতু। কিন্তু আজও শুরু হয়নি ললাট-জনকা রোডে আড়গোয়াল সেতু সংস্কারের কাজ। ওই রাস্তার উপরই প্রতাপদিঘি সেতুর কাজও আংশিক হয়ে থমকে রয়েছে। ফলে পটাশপুর ১, ২ ও ভগবানপুর-২ ব্লকের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ।
২০১০ সালে পটাশপুর-২ ব্লকের আড়গোয়ালে পাঁউশি খালের উপর এই সেতুটি মাল বোঝাই লরিসমেত ভেঙে পড়ে। সেতু তৈরির দায়িত্ব নেয় পূর্ত দফতর (রাস্তা), তমলুক হাইওয়ে ডিভিশন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আশ্বাস দেওয়া হলেও কাজ শুরু হয়নি। আড়গোয়াল থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ললাট, পূর্ব মেদিনীপুরের জনকা, কালীনগর, পাহাড়পুর দিয়ে ৪র্টি পাকা রাস্তা গিয়েছে। এলাকার যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনটি ব্লকের অন্তত দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ নিয়মিত এই সেতুটি ব্যবহার করতেন। |
সিপিএমের প্রতাপদিঘি জোনাল কমিটির সম্পাদক কালীপদ দাসমহাপাত্র বলেন, “সেতু তৈরির বিষয়ে পূর্ত দফতর যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছে না। একই রাস্তায় দশ কিলোমিটারের তফাতে দুটি পৃথক খালের উপর দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু তৈরি করা নিয়ে প্রশাসনের গড়িমসিতে প্রতিদিন প্রায় দু’ লক্ষাধিক মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।”
খালের দুই ধারে পূর্ত ও সেচ দফতরের জায়গায় গত কয়েক দশক ধরে ব্যবসা করতেন প্রায় একশো জন ব্যবসায়ী। সেতুর কাজ শুরু হবে বলে পঞ্চায়েত সমিতি ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ওই ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। আড়গোয়াল ও মংরাজ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা বলেন, “সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে আমরা স্বেচ্ছায় সরে গিয়েছিলাম। কথা দেওয়া হয়েছিল এক বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। কিন্তু এক বছর পরেও কাজ শুরু হয়নি। ব্যবসা বন্ধ থাকায় আমরা পরিবার নিয়ে অর্থ সঙ্কটে রয়েছি।” এই সেতু তৈরি না হওয়া নিয়ে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের ক্ষোভকে ‘সঙ্গত’ বলে দাবি করে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের অপরেশ সাঁতরা বলেন, “খাল পারাপারের জন্য তিন বছর আগে একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হলেও এই বর্ষায় তা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ছোট যান ছাড়া বড় কোনও যান ওই সেতু দিয়ে পারাপার করতে পারে না। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে।”
পূর্ত দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শঙ্করনারায়ণ সাহা ও জেলা পরিষদের সহসভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “ওই সেতু তৈরি করার প্রথম যে প্রকল্প করা হয়, তার বরাদ্দ ছিল ৩ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু বারবার দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনও ঠিকাদার কাজের দায়িত্ব নিতে চাননি। তাই প্রকল্পের কিছু পরিবর্তন করে মোট ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার নতুন প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এই ভিত্তিতে আবার শীঘ্রই দরপত্র আহ্বান করা হবে। ঠিকাদার দায়িত্ব নিলেই কাজ শুরু হবে।” কাঠের সেতুটির বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাসও দেন মামুদ হোসেন। |